যুক্তরাজ্যের দক্ষিণ উপকূলে ব্রাইটনের কাছে পিসহেভেন শহরের একটি মসজিদে আগুন লাগানো হয়েছে। ভেতরে দু’জন ব্যক্তি থাকা অবস্থায় এ আগুন দেওয়ার ঘটনাটিকে ঘৃণামূলক অপরাধ হিসেবে বিবেচনা করছে দেশটির পুলিশ।
শনিবার (৪ অক্টোবর) স্থানীয় সময় রাত ১০টার দিকে জরুরি সেবা সংস্থাগুলো পিসহেভেনের ওই মসজিদে আগুন লাগার খবর পায় । খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। মসজিদের এক স্বেচ্ছাসেবক সিএনএন-কে জানান, ওই রাতে বালাক্লাভা (মুখোশ) পরিহিত দুই ব্যক্তি জোরপূর্বক মসজিদের দরজা খোলার চেষ্টা করে। এরপর তারা সিঁড়িতে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়।
মসজিদের ব্যবস্থাপকের ভাষ্য, ঘটনার সময় মসজিদের চেয়ারম্যান ও এক মুসল্লি ভেতরে চা খাচ্ছিলেন। বাইরে হঠাৎ বিকট শব্দ শুনে তারা দরজার দিকে এগিয়ে গেলে দেখতে পান আগুনের শিখা প্রধান প্রবেশপথ জুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে। ভাগ্যক্রমে তারা প্রাণে রক্ষা পান। তিনি বলেন, “দুর্বৃত্তরা স্পষ্টতই সর্বাধিক ক্ষতি করার উদ্দেশ্যেই এসেছিল। কয়েক সেকেন্ডের ব্যবধানে বড় ধরনের প্রাণহানি ঘটতে পারত।”
ক্যামেরার ফুটেজে দেখা গেছে, মুখোশধারী দুই ব্যক্তি মসজিদের দরজার হাতল টেনে একাধিকবার ধাক্কা দেন। ব্যর্থ হয়ে তারা প্রবেশপথে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে পালিয়ে যায়।
পুলিশ জানিয়েছে, আগুনে মসজিদের সামনের অংশ এবং বাইরে পার্ক করা একটি গাড়ি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। গাড়িটি মসজিদের চেয়ারম্যানের, যিনি পেশায় একজন ট্যাক্সি চালক।
ঘটনার পর স্থানীয় লিবারেল ডেমোক্র্যাট এমপি জেমস ম্যাকক্লেরি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে লিখেছেন, “পিসহেভেন মসজিদে অগ্নিকাণ্ডের খবর শুনে গভীরভাবে মর্মাহত। মসজিদটি স্থানীয় সম্প্রদায়ের জন্য গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাসনালয়। পুলিশ সঠিকভাবেই এটিকে ঘৃণামূলক অপরাধ হিসেবে বিবেচনা করছে।”
সাসেক্স পুলিশের গোয়েন্দা সুপারিনটেনডেন্ট ক্যারি বোহানা জানান, ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে এবং নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। উল্লেখ্য, গত আগস্টেও একই মসজিদে দুটি হামলার ঘটনা ঘটে। তখন ভবনের দিকে ডিম ছোড়া হয় এবং পাশ দিয়ে যাওয়া ব্যক্তিরা মুসল্লিদের উদ্দেশে বর্ণবাদী গালাগাল ছুড়ে দেয়। সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাজ্যে ইসলামোফোবিক ও ইহুদি-বিরোধী হামলা বেড়েছে বলে দেশটির আইনপ্রয়োগকারী সংস্থাগুলো জানিয়েছে।
Leave a comment