রাজধানীর গুলশান ইস্টার্ন হাউজিংয়ে ফ্ল্যাট থাকা সত্ত্বেও সেটি গোপন রেখে পূর্বাচল আবাসিক এলাকায় ১০ কাঠার প্লট নিয়েছিলেন ব্রিটিশ এমপি এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছোট বোন শেখ রেহেনার মেয়ে টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিক।
রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪-এ বিচারক মো. রবিউল আলমের আদালতে সাক্ষ্য দেন চারজন সাক্ষী। তারা হলেন—ইস্টার্ন হাউজিং লিমিটেডের নির্বাহী মহাব্যবস্থাপক মোহাম্মদ ফরহাদুজ্জামান, অপারেটর শেখ শমশের আলী, অ্যাসিস্ট্যান্ট এক্সিকিউটিভ হিমেল চন্দ্র দাস এবং গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা আক্তার জাহান।
সাক্ষীদের জবানবন্দিতে বলা হয়, টিউলিপ সিদ্দিক গুলশানের ফ্ল্যাটটি পরবর্তীতে তার বোন আজমিনা সিদ্দিক রূপন্তি-র কাছে নোটারি পাবলিকের মাধ্যমে হস্তান্তর করার দাবি করেন। তবে আইন অনুযায়ী, রেজিস্ট্রেশন ছাড়া দলিলের মাধ্যমে সম্পত্তি হস্তান্তর বৈধ নয়। ফলে এখনো তিনি ওই ফ্ল্যাটের মালিক হিসেবেই গণ্য।
আসামিরা পলাতক থাকায় তাদের পক্ষে জেরা হয়নি। আদালত আগামী ৬ অক্টোবর পরবর্তী সাক্ষ্য গ্রহণের দিন ধার্য করেছেন। দুদক প্রসিকিউটর খান মো. মঈনুল হাসান (লিপন) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির অভিযোগে দুদক গত জানুয়ারিতে ছয়টি মামলা দায়ের করে। এর মধ্যে শেখ রেহানা ও তার সন্তানদের নামে তিনটি মামলা হয়। গত ৩১ জুলাই এসব মামলায় আদালত অভিযোগ গঠন করে।
তিন মামলার একটিতে টিউলিপ সিদ্দিকসহ ১৭ জন, আরেকটিতে তার বোন আজমিনা সিদ্দিক রূপন্তি ও রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববিসহ ১৮ জন, আরেকটিতে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববিসহ ১৮ জনকে আসামি করা হয়।
অন্য আসামিদের মধ্যে রয়েছেন—জাতীয় গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব শহীদ উল্লা খন্দকার, সাবেক অতিরিক্ত সচিব কাজী ওয়াছি উদ্দিন, সাবেক প্রশাসনিক কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম সরকার, রাজউকের সাবেক চেয়ারম্যান আনিছুর রহমান মিঞা, বিভিন্ন সময়ের একাধিক সদস্য ও কর্মকর্তা, সাবেক প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ এবং প্রধানমন্ত্রীর সাবেক একান্ত সচিব সালাউদ্দিনসহ মোট ৫৫ জন।
মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, সরকারের সর্বোচ্চ পদে অধিষ্ঠিত থাকার সুবাদে শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের সদস্যরা ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন এবং অযোগ্য হয়ে পূর্বাচল আবাসন প্রকল্পের ২৭ নম্বর সেক্টরে ১০ কাঠা করে প্লট বরাদ্দ নিয়েছেন।
Leave a comment