হবিগঞ্জ জেলার বানিয়াচং উপজেলায় ঘটেছে এক মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। ছেলেদের জন্য ওষুধ কিনে দেওয়ার মাত্র দুই ঘণ্টা পরেই সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন বাবা এসএম মিজানুল হক (৪০)। রবিবার (২১ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১টার দিকে চুনারুঘাট উপজেলার দেওরগাছ এলাকায় পুরাতন ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত মিজানুল হক বানিয়াচং উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মরত ইলেকট্রিশিয়ান ছিলেন। গুরুতর আহত হন মোটরসাইকেলের অপর আরোহী পারভেজ আহমেদ। তাকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
চুনারুঘাট থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আক্তার হোসেন জানান, দেওরগাছ এলাকায় দুটি মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষে চালক ও আরোহীরা গুরুতর আহত হন। স্থানীয়রা দ্রুত মিজানুল হককে উদ্ধার করে চুনারুঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেন। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
পরিবার সূত্রে জানা গেছে, সকালে এসএম মিজানুল হক স্ত্রী দিলারা খাতুন লুবনা ও দুই ছেলে—মাশরাফি হক লামি (তৃতীয় শ্রেণি) এবং ছোট ছেলে অমি হক—কে ওষুধ হাতে পৌঁছে দিয়ে বের হন কর্মস্থলের উদ্দেশ্যে। কিছুক্ষণ পর স্ত্রীর সঙ্গে শেষ ফোনালাপ হয়। কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই আসে মৃত্যুসংবাদ।
বানিয়াচং উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্টাফ নার্স সুচিত্রা দাশ বলেন, “মিজানুল ভাই সরকারি চাকরি করলেও হাসপাতালকে নিজের পরিবার মনে করতেন। গভীর রাতেও বিদ্যুৎ বিভ্রাট হলে ছুটে আসতেন হাসপাতালে। তিনি ছিলেন সবার আপনজন।” কর্মস্থল ও শ্বশুরবাড়ি এলাকায় তিনি ছিলেন সবার প্রিয় মুখ। ভালো ক্রিকেট খেলতেন, ছিলেন প্রাণবন্ত সহকর্মী।
তার মৃত্যুর খবরে বানিয়াচং উপজেলাজুড়ে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সহকর্মী ও শুভানুধ্যায়ীরা তার আত্মার মাগফিরাত কামনা করেছেন।
নিহতের শ্যালক, আইডিএলসি ফাইন্যান্স পিএলসির কর্মকর্তা জুনায়েদ আহমেদ জানান, সোমবার সকাল ১১টায় হবিগঞ্জ সদর উপজেলার আল হোসাইন জামে মসজিদ প্রাঙ্গণে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন সম্পন্ন করা হবে।
এসএম মিজানুল হকের অকাল মৃত্যুতে পরিবার, সহকর্মী ও এলাকার মানুষের মধ্যে গভীর শোক নেমে এসেছে।
Leave a comment