নির্বাচনকালীন সরকার যদি নিরপেক্ষ ভূমিকা রাখতে ব্যর্থ হয়, তাহলে দেশে সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজন সম্ভব হবে না বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সদস্য ও ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান।
শুক্রবার সকালে রাজধানীর ধানমন্ডিতে নির্বাচন কমিশনবিষয়ক সাংবাদিকদের সংগঠন রিপোর্টার্স ফোরাম ফর ইলেকশন অ্যান্ড ডেমোক্রেসি ও টিআইবি আয়োজিত প্রশিক্ষণ কর্মশালায় তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, রাজনৈতিক দলগুলো যদি আন্তরিকভাবে নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচন চায়, তাহলে তা সম্ভব হবে। আর এজন্য পর্যবেক্ষক, গণমাধ্যম ও সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করাও জরুরি।
ইফতেখারুজ্জামান উল্লেখ করেন, দীর্ঘ সময় ধরে প্রশাসন ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থায় দলীয় প্রভাব প্রবলভাবে কাজ করছে। পতিত সরকারের ঘনিষ্ঠ অনেকেই এখনো বিভিন্ন সংস্থায় দায়িত্ব পালন করছেন। তাঁর ভাষায়, “আমাদের রাষ্ট্রীয় কাঠামোতে গভর্নেন্সের জবাবদিহি, সততা, শুদ্ধাচার ও স্বচ্ছতা দীর্ঘদিন ধরে ক্ষতিগ্রস্ত। প্রায় ৫৪ বছর ধরেই প্রতিষ্ঠানগুলোকে দলীয়করণের মাধ্যমে কার্যকর বা অকার্যকর করা হয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, প্রশাসনে তিন ধরনের শক্তি সক্রিয়—কেউ সম্পূর্ণ দলীয়করণের মাধ্যমে কাজ করছেন, কেউ বঞ্চিত হয়ে অবস্থান ফিরে পেতে চান, আবার কেউ চেষ্টা করছেন নিরপেক্ষ থেকে দায়িত্ব পালনের। এই টানাপোড়েনের ভেতর দিয়েই প্রশাসন এগোচ্ছে।
ড. ইফতেখারুজ্জামানের মতে, রাতারাতি পুরো প্রশাসনকে নতুনভাবে সাজানো সম্ভব নয়। এ জন্য সময় দিতে হবে, যাতে একটি স্থিতিশীলতা গড়ে ওঠে এবং নতুন ধরনের পেশাদারিত্ব প্রতিষ্ঠিত হয়।
তিনি জোর দিয়ে বলেন, নির্বাচনকালীন সরকার যদি পক্ষপাতিত্ব করে, তাহলে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার প্রতি আস্থা নষ্ট হবে এবং ভোটের বৈধতা প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়বে।

Leave a comment