রাজধানী ঢাকায় বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করছে জামায়াতে ইসলামীসহ সাতটি রাজনৈতিক দল। জাতীয় নির্বাচনসহ কয়েক দফা দাবিতে এই কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছে। সূত্র জানায়, সাতটি দল মিলে তিন দিনের ধারাবাহিক কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। এর মধ্যে বৃহস্পতিবার রাজধানীতে কর্মসূচি, শুক্রবার (১৯ সেপ্টেম্বর) বিভাগীয় শহরগুলোতে এবং আগামী ২৬ সেপ্টেম্বর সব জেলা ও উপজেলায় একযোগে কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
বিক্ষোভে অংশ নিচ্ছে যে সাত দল—
• জামায়াতে ইসলামী
• ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ
• বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস
• খেলাফত মজলিস
• নেজামে ইসলাম পার্টি
• বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন
• জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা)
দলগুলোর ঘোষিত কর্মসূচি ৫ দফা থেকে ৭ দফা পর্যন্ত ভিন্ন হলেও মূল দাবিগুলো প্রায় অভিন্ন।
প্রধান দাবিগুলো-
১. জুলাই সনদের পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন এবং তার ভিত্তিতে জাতীয় নির্বাচন আয়োজন।
২. জাতীয় সংসদের উভয় কক্ষে সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পিআর) পদ্ধতি চালুর দাবি।
৩. অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন নিশ্চিতে সমান সুযোগ বা ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’ নিশ্চিত করা।
৪. পূর্ববর্তী সরকারের সব ধরনের জুলুম, গণহত্যা ও দুর্নীতির বিচার নিশ্চিত করা।
৫. জাতীয় পার্টি ও ১৪ দলের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা।
কোথায়, কখন, কোন দলের কর্মসূচি
• ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ:
জোহর নামাজের পর বায়তুল মোকাররম মসজিদের উত্তর প্রাঙ্গণে বিক্ষোভ মিছিল করে। নেতৃত্ব দেন দলের জ্যেষ্ঠ নায়েবে আমির সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম।
• জামায়াতে ইসলামী:
বিকেল সাড়ে ৪টায় বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের দক্ষিণ ফটকের সামনে সমাবেশ শেষে বিক্ষোভ মিছিল করে। এতে বক্তব্য দেন দলের নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের ও সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার।
• বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস:
আসর নামাজের পর বায়তুল মোকাররম মসজিদের উত্তর ফটকে মিছিল করে। নেতৃত্ব দেন মাওলানা মামুনুল হক।
• খেলাফত মজলিস:
বিকেল ৩টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ করে। দলের মহাসচিব আহমদ আবদুল কাদের প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন।
• বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন:
একই সময়ে ও একই স্থানে (জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে) সমাবেশ ও মিছিল করে।
• নেজামে ইসলাম পার্টি:
বিকেল ৪টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনের সড়কে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করে।
• জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা):
বিকেল সাড়ে ৪টায় বিজয়নগর পানির ট্যাংকের সামনে বিক্ষোভ মিছিল করে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, সাত দলের এই অভিন্ন কর্মসূচি আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের প্রাক্কালে বিরোধী রাজনীতিকে আরও গতিশীল করতে পারে। যদিও বড় রাজনৈতিক জোটগুলো—বিশেষত বিএনপি ও আওয়ামী লীগ—এই আন্দোলনের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত নয়, তবে ছোট ইসলামপন্থী ও জাতীয়তাবাদী দলগুলোর একত্রিত হওয়া রাজনৈতিক মেরুকরণ বাড়ানোর ইঙ্গিত দিচ্ছে।
একই সঙ্গে, নির্বাচনের আগে ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’ এবং জুলাই সনদের বাস্তবায়নের দাবি বিরোধী শিবিরে এখন গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে পরিণত হয়েছে। এই দাবিগুলো সরকার মেনে নেবে কি না, তা রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন আলোচনার জন্ম দেবে বলে মনে করা হচ্ছে।
সাত দলের ঘোষিত তিন দিনের কর্মসূচির আজ প্রথম দিন। আগামীকাল শুক্রবার বিভাগীয় শহরগুলোতে একযোগে বিক্ষোভ হবে। এরপর ২৬ সেপ্টেম্বর জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালনের মাধ্যমে এই ধারাবাহিক আন্দোলন চালিয়ে যাবে দলগুলো।
Leave a comment