ব্রিটিশ পার্লামেন্টের লেবার পার্টির প্রভাবশালী এমপি টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিক বহুবার বলেছেন, তিনি কেবলই যুক্তরাজ্যের নাগরিক। কিন্তু প্রথম আলো ও ব্রিটিশ দৈনিক দ্য টাইমস-এর যৌথ অনুসন্ধানে উঠে এসেছে ভিন্ন তথ্য। নথিপত্র বলছে, টিউলিপ এখনো বাংলাদেশের ভোটার, তাঁর নামে জাতীয় পরিচয়পত্র রয়েছে, এমনকি বাংলাদেশি পাসপোর্টও করা হয়েছিল।
নির্বাচন কমিশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তরের রেকর্ডে দেখা যায়, ২০১১ সালে ঢাকায় টিউলিপের জন্য এনআইডি ইস্যু করা হয়, যেখানে ঠিকানা হিসেবে ধানমন্ডির সুধা সদন ব্যবহার করা হয়েছে। জন্মস্থান সেখানে উল্লেখ আছে ঢাকা, যদিও তাঁর পাসপোর্টে জন্মস্থান লন্ডন লেখা। ২০০১ সালে লন্ডনে বাংলাদেশ হাইকমিশন তাঁর প্রথম বাংলাদেশি পাসপোর্ট ইস্যু করে, আর দ্বিতীয় পাসপোর্ট পান ২০১১ সালে ঢাকার আগারগাঁও অফিস থেকে। ওই সময় তিনি ঢাকায় ছিলেন এবং শেখ হাসিনার সরকারি অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছিলেন।
আইন অনুযায়ী, বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্য উভয় দেশ দ্বৈত নাগরিকত্ব অনুমোদন করে। তবে টিউলিপ এখনো বাংলাদেশি নাগরিকত্ব ত্যাগের কোনো আবেদন করেননি বলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা নিশ্চিত করেছেন। সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী শাহদীন মালিকের মতে, দ্বৈত নাগরিকত্বে আইনি বাধা নেই, তবে সেটি অস্বীকার করা অসত্যের আশ্রয় নেওয়ার শামিল।
অন্যদিকে টিউলিপের মুখপাত্র দাবি করেছেন, বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ তাঁর বিরুদ্ধে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে অপপ্রচার চালাচ্ছে এবং নাগরিকত্ব–সংক্রান্ত নথি জাল। তাঁদের বক্তব্যে বলা হয়, শৈশবের পর টিউলিপ কোনো বাংলাদেশি পাসপোর্ট রাখেননি কিংবা এনআইডিও পাননি।
দুদক ইতিমধ্যে টিউলিপের বিরুদ্ধে দুর্নীতি মামলায় আদালতে প্রমাণ উপস্থাপন শুরু করেছে। বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে তাঁর নাগরিকত্বের প্রমাণ মিললেও টিউলিপ নিজেকে শুধু ব্রিটিশ বলে দাবি করে যাচ্ছেন। ফলে এই দ্বৈত পরিচয় ও নাগরিকত্বের প্রশ্ন ঘিরে বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্য উভয় দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনেই আলোচনার ঝড় উঠেছে।

Leave a comment