ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) এবং হল সংসদ নির্বাচনে গবেষণা ও প্রকাশনা সম্পাদক পদে বিপুল ভোটে জয়ী হয়েছেন জুলাই আন্দোলনের আলোচিত মুখ, স্বতন্ত্র প্রার্থী সানজিদা আহমেদ তন্বি। তিনি ১১,৭৭৭ ভোট পেয়ে পদটি অর্জন করেন।
বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনে আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচন সংশ্লিষ্টরা ফলাফল ঘোষণা করেন।
প্রধান নির্বাচনী ফলাফল-
• সহ-সভাপতি (ভিপি): আবু সাদিক কায়েম (ছাত্রশিবির সমর্থিত ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোট) – ১৪,০৪২ ভোট
• নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী: আবিদুল ইসলাম খান (ছাত্রদল) – ৫,৬৫৮ ভোট
• স্বতন্ত্র জোট প্রার্থী: উমামা ফাতেমা – ২,৫৪৯ ভোট
• স্বতন্ত্র প্রার্থী: শামীম হোসেন – ২,৩৮৫ ভোট
অন্যান্য স্বতন্ত্র ও বৈষম্যবিরোধী প্রার্থীর ফলাফল:
• বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থী সংসদ: আব্দুল কাদের – ৬৬৮ ভোট
• প্রতিরোধ পর্ষদ: শেখ তাসনিম আফরোজ ইমি – ১১ ভোট
নির্বাচনে বিরোধিতা ও অভিযোগ –
নির্বাচনের পর প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী আবিদুল ইসলাম খান ও উমামা ফাতেমা ফলাফল প্রত্যাখ্যান করেছেন। আব্দুল কাদেরও নির্বাচনের ব্যাপক সমালোচনা করে কারচুপির অভিযোগ তুলেছেন।
ভিপি পদে জয়ী সাদিক কায়েম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রশিবিরের সাবেক সভাপতি এবং বর্তমান কেন্দ্রীয় কমিটির প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক। ভোটগ্রহণ চলাকালে তিনি ছাত্রদলের বিরুদ্ধে অনিয়ম এবং প্রশাসনের পক্ষ থেকে অনৈতিক সুবিধা দেয়ার অভিযোগ তুলেছিলেন।
জগন্নাথ হল ব্যতীত সব হলে বড় ব্যবধানে জয় পান সাদিক কায়েম। জগন্নাথ হলে তিনি মাত্র ১০টি ভোট পান, যেখানে ছাত্রদল প্রার্থী আবিদুল ইসলাম খান পান ১,২৭৬ ভোট।
এবার বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের ৮টি কেন্দ্রে ৮১০টি বুথে ভোটগ্রহণ চলে। মোট ভোটার সংখ্যা ছিল ৩৯,৮৭৪ জন। পাঁচটি ছাত্রী হলে ১৮,৯৫৯ ভোট এবং ১৩টি ছাত্র হলে ২০,৯১৫ ভোট।
ডাকসুতে ২৮টি পদের জন্য ৪৭১ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। হল সংসদের জন্য ২৩৪টি পদের লড়াইয়ে ১,০৩৫ জন প্রার্থী অংশ নেন। অর্থাৎ মোট ভোটাররা ৪১টি ভোট প্রদানের সুযোগ পান।
গত বছরের ১৫ জুলাই বিকেলে ছাত্রলীগের হামলায় আহত হন সানজিদা আহমেদ তন্বি। তার রক্তে মাখা চেহারা সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয় এবং আন্দোলনকে ব্যাপক অনুপ্রেরণা জোগায়।
এই নির্বাচনে তার জয় শিক্ষার্থী রাজনীতিতে স্বতন্ত্র প্রার্থীর শক্তি ও জুলাই আন্দোলনের প্রভাবকে আরও সুস্পষ্টভাবে তুলে ধরেছে।
Leave a comment