ছোট ও বড় পর্দার পরিচিত মুখ সমু চৌধুরী সম্প্রতি একটি ব্যতিক্রমী ঘটনার মাধ্যমে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে চলে আসেন। টাঙ্গাইলের গফরগাঁওয়ের মিসকিন মাজারের গাবগাছতলায় মাটির ওপর মাদুর বিছিয়ে গামছা পরে গভীর ঘুমে থাকা তার ছবি ও ভিডিও মুহূর্তেই ভাইরাল হয়ে যায়।
ঘটনাটি নিয়ে নানা ধরনের জল্পনা ও মন্তব্য ছড়িয়ে পড়লেও সমু চৌধুরী জানিয়েছেন, বর্তমানে তিনি সুস্থ আছেন এবং কোনো শারীরিক সমস্যায় ভুগছেন না। সম্প্রতি এক গণমাধ্যমের স্টুডিও সাক্ষাৎকারে তিনি নিজের অভিজ্ঞতা, জীবনদর্শন ও ভাইরাল হওয়া সেই ঘটনার ব্যাখ্যা দেন।
সাক্ষাৎকারে সমু চৌধুরী স্পষ্ট ভাষায় বলেন, “আমি ভবের পাগল নই, ভাবের পাগল।” তার ভাষ্যে, জীবনের ব্যস্ততা ও চাপ থেকে মুক্তি পেতে তিনি প্রায়ই একা একা বেরিয়ে পড়েন। নিজের মতো সময় কাটানো ও ভিন্ন অভিজ্ঞতার খোঁজে মাজারে যাওয়া তার কাছে একটি আত্মিক যাত্রা।
মাজারে যাওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আমি পাগল দেখতে যাই না। আমারে যে পাগল বলল, সে জানে না— আমার চেয়ে বড় বড় পাগলও আছে। পাগল হতে হলে অতি সাধারণ হতে হয়, কিন্তু আমাদের এই চেহারা নিয়ে তা সম্ভব না। তারপরও দায়িত্ব পালন করেই যেতে হয়, নইলে সবাই বলবে হেরে গেছি।”
নিজেকে নিয়ে বিভিন্ন সমালোচনা প্রসঙ্গে তিনি খানিকটা রসিকতার সুরে বলেন,“আমার মতো এত ভাইরাল হও না ল্যাংটা হয়ে! আছে কোনো শিল্পী, যার কলিজা আছে এটা করার? সমু চৌধুরী অনেক বড় জিনিস— সবাই আমাকে ধরতে পারবে না। কিন্তু ‘সমু পাগলের’ কাছে সবাই যেতে পারবে, কারণ সে সাধারণ মানুষের।”
তার এই বক্তব্যে বোঝা যায়, সমু চৌধুরী নিজের জনপ্রিয়তা ও পরিচিতি নিয়ে সচেতন হলেও সাধারণ মানুষের সঙ্গে সংযোগ বজায় রাখতে চান। তার কাছে ‘পাগল’ শব্দটি নেতিবাচক নয়; বরং এটি একধরনের মুক্তি ও সৃষ্টিশীলতার প্রতীক।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়া নিয়ে সমু চৌধুরীর দৃষ্টিভঙ্গি স্বতন্ত্র। তিনি মনে করেন, ভাইরাল হওয়া শুধু খ্যাতি নয়, বরং মানুষের মনোযোগ কাড়ার একটি সুযোগ, যেখানে শিল্পী নিজের ভাবনা, দর্শন ও ব্যক্তিগত বার্তা পৌঁছে দিতে পারেন। সমু চৌধুরীর এই ব্যাখ্যা ও জীবনদর্শন তার ভক্তদের কাছে নতুন করে ভাবতে বাধ্য করছে— একজন শিল্পীর জীবন কেবল অভিনয়েই সীমাবদ্ধ নয়, বরং তার নিজের অস্তিত্ব ও অভিজ্ঞতার সাথেও গভীরভাবে যুক্ত।
Leave a comment