আজ ৬ আগস্ট, হিরোশিমায় পারমাণবিক বোমা হামলার ৮০ বছর পূর্ণ হলো। ১৯৪৫ সালের এই দিনে যুক্তরাষ্ট্রের ফেলা পারমাণবিক বোমায় শহরটি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছিল এবং প্রায় ১ লাখ ৪০ হাজার মানুষের প্রাণহানি ঘটে। সেই স্মৃতি স্মরণে আজ শহরে নানা কর্মসূচি পালিত হয়েছে।
সকাল ৮টা ১৫ মিনিটে হামলার সময়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। অনুষ্ঠানে জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবা, হিরোশিমার মেয়র কাজুমি মাতসুই, জাতিসংঘের প্রতিনিধি ও ১২০টি দেশ ও অঞ্চলের প্রতিনিধিরা অংশ নেন। বেঁচে যাওয়া মানুষের সংখ্যা দিন দিন কমে যাচ্ছে। তাদের গড় বয়স এখন ৮৬ বছরের বেশি।
৯৪ বছর বয়সী মিনোরু সুজুতো বলেন, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে অভিজ্ঞতা জানানোর সময় আর বেশি নেই। তাই যতটা সম্ভব বলার চেষ্টা করছেন তিনি।
আরেকজন বেঁচে থাকা ব্যক্তি ৭৪ বছর বয়সী কাজুও মিয়োশি, পারমাণবিক অস্ত্রকে অপ্রয়োজনীয় ও মানবতার জন্য ক্ষতিকর বলে মন্তব্য করেন।
হিরোশিমার মেয়র সতর্ক করেন, সামরিক শক্তি বৃদ্ধির প্রবণতা ও পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারে গ্রহণযোগ্যতা বাড়ছে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং মধ্যপ্রাচ্যের অস্থিরতার প্রেক্ষাপটে তিনি বলেন, অতীত থেকে শিক্ষা নিয়ে এখনই শান্তির উদ্যোগ নিতে হবে।
‘নিহন হিদাঙ্কি’ নামে জাপানের একটি সংগঠন, যারা নোবেল শান্তি পুরস্কার পেয়েছে, তারা বলেছে—সময় দ্রুত ফুরাচ্ছে এবং পারমাণবিক হুমকি এখন আগের চেয়েও বেশি।
এবারের স্মরণ অনুষ্ঠানেও রাশিয়া, বেলারুসসহ ১২০টি দেশ ও অঞ্চলের প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন। সকাল ৮টা ১৫ মিনিটে যে সময় বোমা ফেলা হয়েছিল এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবা, শহরের মেয়র ও অন্যান্য কর্মকর্তারা স্মৃতিস্তম্ভে ফুল অর্পণ করেন।
জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, বেঁচে থাকা মানুষের সাক্ষ্য এবং শান্তির বার্তা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবা তার ভাষণে পারমাণবিক অস্ত্রমুক্ত বিশ্ব গড়ার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছেন। তবে তিনি পারমাণবিক অস্ত্র নিষিদ্ধকরণ চুক্তির উল্লেখ করেননি। তিনি বলেন, আমরা অপারমাণবিক নীতি মানি, তবে পারমাণবিক অস্ত্রধারী প্রতিবেশীদের কারণে যুক্তরাষ্ট্রের ছত্রছায়ায় নির্ভরতা যৌক্তিক।
সূত্র: এপি
Leave a comment