চলমান যুদ্ধবিরতি আলোচনা সত্ত্বেও গাজায় থেমে নেই ইসরায়েলের ভয়াবহ সামরিক আগ্রাসন। একদিনেই ইসরায়েলি হামলায় আরও ১১১ জন ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছেন। হতাহতদের মধ্যে রয়েছে শিশু, নারী ও ত্রাণ নিতে আসা সাধারণ মানুষ।
বুধবার (৩ জুলাই) কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা এক প্রতিবেদনে জানায়, নিহতদের মধ্যে ২৪ জন ছিলেন একটি ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রে খাবারের জন্য অপেক্ষমান। তাদের ওপর ইসরায়েলি বাহিনী (আইডিএফ) বিধ্বংসী বিমান হামলা চালায়।
গাজার ইন্দোনেশিয়ান হাসপাতালের পরিচালকের বাড়িতে সবচেয়ে হৃদয়বিদারক হামলা চালানো হয় । ওই হামলায় হাসপাতালটির পরিচালক ড. মারওয়ান আল সুলতান, তার স্ত্রী ও এক কন্যা মারা গেছেন। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
নিহত চিকিৎসককে “সন্ত্রাসী” হিসেবে আখ্যায়িত করেছে ইসরায়েলি বাহিনী, যদিও তার বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য উপস্থাপন করা হয়নি। গাজাবাসীর জন্য চিকিৎসাসেবার অন্যতম ভরসা এই হাসপাতালের পরিচালকের হত্যা বিশ্বজুড়ে নিন্দার ঝড় তুলেছে।
এছাড়া, উত্তর ও দক্ষিণ গাজার বিভিন্ন অংশে, বিশেষ করে শরণার্থী শিবির ও কথিত ‘নিরাপদ’ ঘোষিত অঞ্চলে আরও বহু সাধারণ মানুষ ইসরায়েলের হামলায় হতাহত হয়েছেন। গাজার স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ জানায়, এসব হামলায় শিশুসহ নিহত হয়েছে অন্তত ৫ জন। বিশ্লেষকরা বলছেন, একদিকে যখন যুদ্ধবিরতি ও বন্দী বিনিময়ের আলোচনা চলছে, অন্যদিকে তখনই ইসরায়েলি বাহিনীর এমন বর্বর হামলা তাদের প্রকৃত উদ্দেশ্যকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে।
ইতোমধ্যে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো এই নৃশংসতা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। তবে বাস্তবে কোনো প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা দেখা যাচ্ছে না।
জাতিসংঘ, ওআইসি ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর প্রতি দাবি উঠেছে, যেন তারা অবিলম্বে গাজায় চলমান এই মানবিক বিপর্যয় থামাতে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়। দিনের পর দিন মৃত্যু ও ধ্বংসে বিধ্বস্ত গাজাবাসীরা বিশ্ব বিবেকের জবাব খুঁজছে আজও।
Leave a comment