১৯৩৭ সালের ২৬ এপ্রিল জন্মগ্রহণ করেন মধ্যপ্রাচ্যের অন্যতম আলোচিত ও বিতর্কিত রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব সাদ্দাম হুসেইন। তিনি ছিলেন ইরাকের পঞ্চম রাষ্ট্রপতি এবং ১৯৭৯ সাল থেকে ২০০৩ সাল পর্যন্ত দীর্ঘ ২৪ বছর ধরে দেশটি শাসন করেন। তাঁর জন্ম ইরাকের তিকরিত শহরের কাছে আল-আওজা নামক গ্রামে এক দরিদ্র পরিবারে। শৈশবে দারিদ্র্য, অনিশ্চয়তা এবং রাজনৈতিক সহিংসতা তাঁর জীবনের অংশ ছিল।
সাদ্দাম হুসেইনের রাজনৈতিক উত্থান ঘটে বাথ পার্টির সদস্য হিসেবে। ১৯৬৮ সালে এই দলটি যখন একটি অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করে, তখন থেকেই সাদ্দাম হুসেইনের প্রভাব ও ক্ষমতা দ্রুত বাড়তে থাকে। ১৯৭৯ সালে রাষ্ট্রপতি পদে অধিষ্ঠিত হওয়ার পর তিনি দেশের তেল সম্পদের উপর নিয়ন্ত্রণ দৃঢ় করেন এবং বিভিন্ন অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ করেন।
তবে সাদ্দাম হুসেইনের শাসনকাল ছিল কঠোর দমননীতিমূলক। বিরোধীদের প্রতি নির্মমতা, কুর্দিদের ওপর রাসায়নিক হামলা এবং ১৯৯০ সালে কুয়েত দখল করে নেওয়ার ঘটনাগুলো তাঁকে আন্তর্জাতিকভাবে সমালোচিত করে তোলে। এর ফলশ্রুতিতে ১৯৯১ সালে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে গঠিত জোট বাহিনীর সঙ্গে ‘গাল্ফ যুদ্ধ’ সংঘটিত হয়। পরে ২০০৩ সালে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে ইরাকে সামরিক আগ্রাসন চালানো হলে সাদ্দাম হুসেইনের শাসনের অবসান ঘটে। তিনি গোপনে আত্মগোপনে চলে গেলেও ২০০৩ সালের শেষদিকে ধরা পড়েন এবং পরে ২০০৬ সালে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়।
তাঁর জন্মদিন ২৬ এপ্রিল নানা দৃষ্টিকোণ থেকে মূল্যায়িত হয়। কেউ তাঁকে মধ্যপ্রাচ্যের শক্তিমান নেতা হিসেবে মনে করেন, আবার কেউ তাঁকে স্বৈরাচারী শাসকের প্রতীক হিসেবে দেখেন। ইতিহাসের পাতায় সাদ্দাম হুসেইনের নাম আজও আলোচনার কেন্দ্রে থাকে তাঁর শাসন, যুদ্ধ, বিতর্ক এবং পতনের জন্য।
Leave a comment