গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর খান ইউনিসের আল–মাহাত্তা এলাকায় ইসরায়েলের ভোররাতের বিমান হামলায় একটি পুরো ফিলিস্তিনি পরিবার ধ্বংস হয়ে গেছে। বৃহস্পতিবার ভোর রাত ৩টার দিকে চালানো এই হামলায় নিহত হয়েছেন মাজেন আল-ফাররা, তাঁর স্ত্রী, শাশুড়ি, পাঁচ সন্তান এবং দুই ভাতিজা-ভাতিজি। নিহতদের মধ্যে সাতজনই শিশু।
মাজেন আল-ফাররার পরিবার যে বাড়িতে বসবাস করতেন, সেটি আগেও একবার ইসরায়েলি হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। মেরামতের পর সম্প্রতি পরিবারটি সেখানে আবার উঠেছিল। কিন্তু শনিবারের এই হামলা সে স্বপ্নকেও গুঁড়িয়ে দেয়। স্থানীয়রা জানান, বাড়িটি সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গেছে, এবং ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে শিশুদের মৃতদেহ একে একে উদ্ধার করা হয়।
এই ঘটনার কিছুক্ষণ পরই ইসরায়েল আরও একটি হামলা চালায় গাজার উত্তরের বাইত লাহিয়ায়। সেখানে মুয়াবিয়াহ ইবনে আবি সুফিয়ান স্কুলের ফটকে চালানো হামলায় প্রাণ হারান আরও তিনজন। ওই স্কুলে বহু বাস্তুচ্যুত মানুষ আশ্রয় নিয়েছিলেন।
২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে গাজায় ধারাবাহিকভাবে বিমান হামলা চালিয়ে আসছে ইসরায়েল। ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে একবার যুদ্ধবিরতি হলেও তা মার্চে ভেঙে পুনরায় শুরু হয় হামলা। জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থী সংস্থা (ইউএনআরডব্লিউএ) জানায়, নতুন দফায় হামলার পর থেকে অন্তত ৪ লাখ মানুষ নতুন করে বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, যুদ্ধবিরতির পর থেকে ইসরায়েলি হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত দেড় হাজার ফিলিস্তিনি। আর পুরো যুদ্ধজুড়ে এখন পর্যন্ত নিহত হয়েছেন ৫০ হাজার ৮০০ জনের বেশি, যাঁদের মধ্যে শিশু রয়েছে অন্তত ১৫ হাজার। নিখোঁজ রয়েছেন আরও প্রায় ১০ হাজার মানুষ।
গাজা যেন প্রতিদিনই আরও এক নতুন কবরস্থানে পরিণত হচ্ছে। এবং সেই করুণ বাস্তবতার নির্মম প্রতীক হয়ে থাকল মাজেন আল-ফাররার পরিবারের এই বিপর্যয়।
Leave a comment