১৯৬৫ সালের ২৬ এপ্রিল, যুক্তরাষ্ট্র এক ঐতিহাসিক এবং বিতর্কিত সামরিক অভিযানে জড়ায়। ডোমিনিকান প্রজাতন্ত্রের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক অস্থিরতা ও বিদ্রোহের সুযোগে যুক্তরাষ্ট্র “জাতীয় স্বার্থ রক্ষার” অজুহাত তুলে দেশটিতে সামরিক হস্তক্ষেপ চালায়। এই পদক্ষেপ শুধু লাতিন আমেরিকায় নয়, আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও সমালোচনার জন্ম দেয়।
ঘটনার পটভূমিতে ছিল ডোমিনিকান প্রজাতন্ত্রের দীর্ঘ রাজনৈতিক সংকট। ১৯৬৩ সালে দেশটির গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট হুয়ান বোশকে সামরিক বাহিনী অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতাচ্যুত করে। এরপর দেশটি সামরিক শাসনের অধীনে চলে যায়। ১৯৬৫ সালের এপ্রিল মাসে গণতন্ত্রপন্থি বিদ্রোহীরা বোশের পুনর্বহালের দাবিতে আন্দোলনে নামে, যা দ্রুত সশস্ত্র সংঘর্ষে রূপ নেয়।
এই পরিস্থিতিকে যুক্তরাষ্ট্র তাদের নাগরিক ও পশ্চিমা স্বার্থ রক্ষার জন্য হুমকি হিসেবে চিহ্নিত করে। প্রেসিডেন্ট লিন্ডন বি. জনসনের নির্দেশে প্রায় ২২,০০০ মার্কিন সৈন্য ডোমিনিকান প্রজাতন্ত্রে প্রেরণ করা হয়। যদিও বলা হয়, এ অভিযান ছিল মার্কিন নাগরিকদের নিরাপত্তা ও কমিউনিজম প্রতিরোধের জন্য, তবে বিশ্লেষকদের মতে এটি ছিল সরাসরি একটি স্বাধীন দেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ।
এই সামরিক অভিযানের বিরুদ্ধে ডোমিনিকান জনগণের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক মহল থেকেও প্রবল সমালোচনা উঠে। অনেকেই একে “নতুন ঔপনিবেশিকতা”র প্রতিচ্ছবি বলে আখ্যা দেন। এই ঘটনার মধ্য দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের বৈদেশিক নীতিতে একধরনের সামরিক আধিপত্যবাদ স্পষ্ট হয়ে ওঠে।
২৬ এপ্রিল ১৯৬৫ সালের এই দিনটি তাই আজও লাতিন আমেরিকার ইতিহাসে মার্কিন হস্তক্ষেপের এক অন্যতম উদাহরণ হিসেবে বিবেচিত হয়। ঘটনা আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে বহুপাক্ষিকতার প্রয়োজন ও আঞ্চলিক নিরাপত্তা নীতির সীমাবদ্ধতাও স্পষ্ট করে তোলে।
Leave a comment