ভারতের উত্তর প্রদেশে হেলমেট না পরায় এক স্কুটারচালকের বিরুদ্ধে প্রায় ২১ লাখ রুপি জরিমানার চালান ইস্যু করেছে স্থানীয় ট্রাফিক পুলিশ। ঘটনাটি সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হলে পরে জানা যায়, এটি পুলিশের একটি টাইপ ভুল। প্রকৃত জরিমানার পরিমাণ ছিল মাত্র ৪ হাজার রুপি।
মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) মুজাফফরনগরের নিউ মাণ্ডি এলাকায় ঘটনাটি ঘটেছে। স্থানীয় যুবক অনমোল সিংহল হেলমেট ছাড়াই স্কুটার চালাচ্ছিলেন এবং সঙ্গে ছিল না প্রয়োজনীয় কাগজপত্র। ট্রাফিক পুলিশ তাকে থামিয়ে যানটি জব্দ করে ও জরিমানার চালান দেয়। কিন্তু চালানে দেখা যায় জরিমানার পরিমাণ লেখা হয়েছে ২০ লাখ ৭৪ হাজার রুপি, যা দেখে হতভম্ব হয়ে যান অনমোল।
পরবর্তীতে তিনি চালানের একটি ছবি তুলে সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট করলে মুহূর্তেই তা ভাইরাল হয়। পোস্টে দেখা যায়, স্কুটারের দাম মাত্র এক লাখ রুপি, অথচ জরিমানা তার ২০ গুণেরও বেশি। এ নিয়ে নেটিজেনদের মধ্যে ব্যাপক আলোচনা ও সমালোচনা শুরু হয়।
বিষয়টি নজরে এলে মুজাফফরনগর ট্রাফিক পুলিশ জরিমানার অঙ্ক সংশোধন করে জানায়, এটি প্রশাসনিক ভুল ছিল। পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়, সাব-ইনস্পেক্টরের টাইপিং ত্রুটির কারণে ‘MV Act’-এর ধারা উল্লেখ না থাকায় জরিমানার অঙ্কে সংখ্যাগত বিভ্রাট ঘটে। ফলে ২০৭ ও ৪০০০ একত্রে লেখা হয়ে ২০ লাখ ৭৪ হাজার হয়ে যায়।
মুজাফফরনগর ট্রাফিক পুলিশ সুপার অতুল চৌবে জানান, “এটি নিছক মানবিক ভুল। প্রকৃত জরিমানার অঙ্ক মাত্র ৪ হাজার রুপি ছিল। চালানটি সংশোধন করা হয়েছে এবং ভবিষ্যতে এমন ভুল এড়াতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।”
ভারতের মোটরযান আইনের ২০৭ ধারা অনুযায়ী, প্রয়োজনীয় কাগজপত্র না থাকলে পুলিশ যে কোনো যানবাহন জব্দ করতে পারে। নিয়ম অনুযায়ী, হেলমেট না পরা ও কাগজপত্রবিহীনভাবে যান চালানোর দায়ে কয়েকশ থেকে কয়েক হাজার রুপি পর্যন্ত জরিমানা হতে পারে।
এদিকে ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দেয়। অনেকেই মজার ছলে মন্তব্য করেন, “এই জরিমানা মেটাতে অনমোলের পুরো জীবন লেগে যাবে।” অন্যরা পুলিশের প্রযুক্তিগত ত্রুটির সমালোচনা করে বলেন, এমন ভুল সাধারণ নাগরিকদের ভোগান্তি বাড়ায়।
পরে অনমোল স্থানীয় গণমাধ্যমকে বলেন, “প্রথমে আমি ভেবেছিলাম কেউ আমার সঙ্গে মজা করছে। এত বড় অঙ্ক দেখে বিশ্বাসই করতে পারিনি। পরে পুলিশ নিজে এসে ভুল স্বীকার করে।”
সূত্র: এনডিটিভি
Leave a comment