Home আন্তর্জাতিক স্পেনগামী জাহাজডুবি: মৌরিতানিয়া উপকূলে প্রাণ হারালেন অন্তত ১৪০ অভিবাসনপ্রত্যাশী
আন্তর্জাতিকদুর্ঘটনা

স্পেনগামী জাহাজডুবি: মৌরিতানিয়া উপকূলে প্রাণ হারালেন অন্তত ১৪০ অভিবাসনপ্রত্যাশী

Share
Share

স্পেনের ক্যানারি দ্বীপপুঞ্জগামী একটি অভিবাসী নৌযান, মৌরিতানিয়ার উপকূলে ডুবে গিয়ে অন্তত ১৪০ জনের মৃত্যু হয়েছে। তিন দিন আগে সংঘটিত এ দুর্ঘটনার খবর প্রকাশ করেছে স্প্যানিশ বার্তাসংস্থা ইএফই।

এখন পর্যন্ত ৭০ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে এবং ১৭ জনকে জীবিত অবস্থায় পাওয়া গেছে। তবে এখনও ৭৫ থেকে ৮০ জন যাত্রী নিখোঁজ রয়েছেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

বেঁচে যাওয়া যাত্রীদের বরাতে জানা গেছে, নৌযানটি গাম্বিয়া থেকে যাত্রা শুরু করে ইউরোপের প্রবেশদ্বার হিসেবে পরিচিত ক্যানারি দ্বীপপুঞ্জের উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছিল। কিন্তু মৌরিতানিয়ার উপকূলের কাছাকাছি পৌঁছেই নৌযানটি ডুবে যায়। স্প্যানিশ এনজিও ওয়াকিং বর্ডারস জানিয়েছে, নৌযানটিতে প্রায় ১৬০ জন অভিবাসনপ্রত্যাশী ছিলেন।

ওয়াকিং বর্ডারের নির্বাহী প্রধান হেলেনা মালেনো স্পেনের টেলিভিশন চ্যানেল ক্যাডেনা সের-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, “এটি চলতি গ্রীষ্মের সবচেয়ে বড় দুর্ঘটনাগুলোর একটি।”

তিনি আরও উল্লেখ করেন, ২০২৪ সালের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় ৪৭ হাজার অভিবাসনপ্রত্যাশী ক্যানারি দ্বীপপুঞ্জে পৌঁছেছেন। তবে একই সময়ে বিপদসঙ্কুল আটলান্টিক পথ পাড়ি দিতে গিয়ে ৭ হাজার ৭৫০ জনেরও বেশি প্রাণ হারিয়েছেন।

আফ্রিকা থেকে ইউরোপে যাওয়ার জন্য ক্যানারি দ্বীপপুঞ্জ রুটকে প্রধান প্রবেশপথ হিসেবে বেছে নেন অনেকেই। তবে আটলান্টিক মহাসাগরের এই দীর্ঘ ও ভয়ংকর যাত্রাপথে শক্তিশালী স্রোত, অস্থির সমুদ্র ও অতিরিক্ত যাত্রী বহনকারী নৌযানগুলো মৃত্যুর ঝুঁকি বহুগুণ বাড়িয়ে তোলে। এ রুট দিয়ে ইউরোপের অন্যান্য দেশে পৌঁছানো তুলনামূলক সহজ হলেও, এটি বর্তমানে বিশ্বের অন্যতম প্রাণঘাতী অভিবাসন করিডর হিসেবে পরিচিত।

মানবাধিকার সংস্থাগুলো বলছে, প্রতি বছর হাজারো মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এ পথে যাত্রা করেন শুধু দারিদ্র্য, রাজনৈতিক অস্থিরতা বা নিপীড়ন থেকে মুক্তির আশায়। কিন্তু পর্যাপ্ত আইনগত ও নিরাপদ অভিবাসন পথ না থাকায় মানুষ পাচারকারী চক্রের কাছে এরা সহজ টার্গেটে পরিণত হচ্ছেন।

ওয়াকিং বর্ডারসের হেলেনা মালেনো বলেন, “আটলান্টিকে প্রতিটি প্রাণহানি রাজনৈতিক ব্যর্থতার প্রতীক।” তিনি ইউরোপ ও আফ্রিকার দেশগুলোকে মানবিক নিরাপত্তাকে অগ্রাধিকার দিয়ে যৌথভাবে সমাধান বের করার আহ্বান জানান।  ২০২৪ সালের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ক্যানারি দ্বীপপুঞ্জে পৌঁছেছেন প্রায় ৪৭ হাজার অভিবাসনপ্রত্যাশী, কিন্তু একই সময়ে বিপদসঙ্কুল এই পথ পাড়ি দিতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন ৭ হাজার ৭৫০ জনেরও বেশি মানুষ।

এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা আবারও প্রমাণ করলো, আফ্রিকা থেকে ইউরোপগামী অভিবাসীদের জন্য আটলান্টিক সাগর শুধু আশার পথ নয়, অনেক সময় তা পরিণত হচ্ছে মৃত্যুফাঁদে।

Share

Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Don't Miss

থাইল্যান্ড–কম্বোডিয়া সীমান্তে নতুন করে গোলাগুলি, দু’দিনে নিহত ৭

দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার প্রতিবেশী দুই দেশ থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার সীমান্তে চার মাস পর আবারও উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। গত রোববার থেকে শুরু হওয়া সংঘাতে অন্তত...

ইতিহাসের এই দিনে ঘটে যাওয়া উল্লেখযোগ্য ঘটনা

আজ মঙ্গলবার ০৯ ডিসেম্বর, ২০২৫ ইং। ২৪ অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বাংলা। ১৭ জমাদিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি। বছর শেষ হতে আরো ২২ দিন বাকি রয়েছে।...

Related Articles

দশ লাখ ডলারের ‘গোল্ড কার্ড’ অভিবাসন ভিসা চালু  করলো যুক্তরাষ্ট্র

যুক্তরাষ্ট্রে দ্রুত নাগরিকত্ব পেতে আগ্রহী ধনী বিদেশিদের জন্য নতুন ভিসা কর্মসূচি চালু...

কঠোর নিরাপত্তায় আল-আকসায় ইসরায়েলিদের অনুপ্রবেশ, উত্তেজনা চরমে

অধিকৃত পূর্ব জেরুজালেমের আল-আকসা মসজিদ প্রাঙ্গণে কঠোর নিরাপত্তার মধ্যেই প্রায় দুই শতাধিক...

মিয়ানমারের হাসপাতালে বিমান হামলা: নিহত কমপক্ষে ৩১

বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে একটি হাসপাতালে সামরিক জান্তার বিমান হামলায় কমপক্ষে...

মালয়েশিয়ায় দুই অভিযানে ৪৭ বাংলাদেশি আটক

মালয়েশিয়ার তেরেঙ্গানু রাজ্যে অবৈধ অভিবাসীদের বিরুদ্ধে পরিচালিত দুটি পৃথক অভিযানে বাংলাদেশিসহ ৫৬...