ইসলামে মানুষের সঙ্গে উত্তম ব্যবহার ও সৌজন্যপূর্ণ আচরণ শুধু সামাজিক সম্পর্ক রক্ষা নয়, বরং এক ধরনের ইবাদত হিসেবেই বিবেচিত। আল্লাহ তাআলা কোরআনে কারিমে বারবার উল্লেখ করেছেন, মানুষের সঙ্গে কোমলভাবে কথা বলা, নম্রতা ও সদ্ব্যবহার করা প্রতিটি মুমিনের জন্য অপরিহার্য কর্তব্য। রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর জীবন ছিল এই শিক্ষার প্রকৃষ্ট উদাহরণ।
আল-কোরআনের বহু আয়াতে বলা হয়েছে, পিতা-মাতা, আত্মীয়স্বজন, এতিম, দরিদ্র, প্রতিবেশী, সঙ্গী-সাথি এমনকি অধীনস্থদের সঙ্গেও সদ্ব্যবহার করতে হবে। (সুরা নিসা, আয়াত: ৩৬)। আল্লাহ তাঁর প্রিয় রাসুলকে বলেছেন, ‘আপনি যদি কঠোর হতেন, তাহলে তারা আপনার কাছ থেকে দূরে সরে যেত।’ (সুরা আলে ইমরান, আয়াত: ১৫৯)। এই শিক্ষা অনুসরণেই একজন মুসলিমের উত্তম চরিত্র গঠিত হয়।
রাসুল (সা.) বলেছেন, কিয়ামতের দিন মুমিনের আমলনামায় সবচেয়ে ভারী আমল হবে তার উত্তম আচরণ। এমনকি উত্তম আচরণ দ্বারা নফল রোজা ও তাহাজ্জুদের সওয়াবও অর্জিত হয়। তিনি আরও বলেন, ‘যে ভালো ব্যবহার থেকে বঞ্চিত, সে সব কল্যাণ থেকেই বঞ্চিত।’ (মুসলিম)।
সুন্দর ব্যবহারের ফলে মানুষের হৃদয়ে স্থান পাওয়া যায়, সমাজে সৌহার্দ্য গড়ে ওঠে এবং তা আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের মাধ্যমও হয়। কোরআনের নির্দেশ অনুযায়ী, মুমিনদের সঙ্গে কোমল আচরণ করতে বলা হয়েছে। যারা অন্যদের সৌজন্যমূলক সম্ভাষণ জানায়, তাদের চেয়েও সুন্দরভাবে জবাব দিতে উৎসাহ দেওয়া হয়েছে। (সুরা নিসা, আয়াত: ৮৬)।
উত্তম আচরণ শুধু ব্যক্তি চরিত্রের মানদণ্ড নয়, বরং এটা মানুষের জীবনে শান্তি, কল্যাণ ও বরকতের উৎস হয়ে ওঠে। পরিবার, সমাজ ও জাতির পরিসরে সুন্দর ব্যবহারের প্রভাব সুদূরপ্রসারী।
মুফতি মাওলানা শাঈখ মুহাম্মাদ উছমান গনীর মতে, একজন ইমানদারের সর্বোত্তম বৈশিষ্ট্য তার চরিত্র। আর এই চরিত্রই জান্নাতের উচ্চস্তরের নিশ্চয়তা দেয়। ইসলাম তাই শুধু নামাজ, রোজা বা হজের মাধ্যমে নয়, আচার-আচরণ ও ব্যবহারের মাধ্যমেও আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের পথ খুলে দেয়।
Leave a comment