রাজশাহীর চারঘাট উপজেলায় স্কুলছাত্রীকে উত্ত্যক্তের প্রতিবাদ করায় বাবাকে কুপিয়ে গুরুতর জখম করেছে স্থানীয় এক যুবক ও তার সহযোগীরা। সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে খোদ্দগোবিন্দপুর (বিলপাড়া) গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
আহত বাবার নাম মো. নাসিরুদ্দিন (৫০)। তিনি বর্তমানে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, খোদ্দ গোবিন্দপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী মোছাঃ তাসনিম আক্তার (১৩)-কে দীর্ঘদিন ধরে একই গ্রামের যুবক মো. মোহন আলী (১৮) উত্ত্যক্ত করে আসছিলেন এবং তাকে প্রেমের প্রস্তাব দিচ্ছিলেন।
ঘটনা সম্পর্কে জানতে পেরে সোমবার বিকেলে নাসিরুদ্দিন নিতাই সাহার মোড়ে মোহন আলীকে বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন করেন। এ সময় উত্তেজিত হয়ে মোহন আলী তার কয়েকজন সহযোগীকে সঙ্গে নিয়ে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে নাসিরুদ্দিনের ওপর হামলা চালান।
স্থানীয়রা দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে রক্তাক্ত অবস্থায় নাসিরুদ্দিনকে উদ্ধার করে চারঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে অবস্থার অবনতি হলে রাতেই তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। চিকিৎসকরা জানান, তার অবস্থা আশঙ্কাজনক।
চারঘাট মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা জানান, “এ ঘটনায় এখনো কোনো লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।” পুলিশের পক্ষ থেকে আরও বলা হয়, অভিযোগ পাওয়া মাত্র আসামিদের চিহ্নিত করে গ্রেফতারে অভিযান পরিচালনা করা হবে।
ঘটনার পর এলাকাবাসীর মধ্যে তীব্র ক্ষোভ বিরাজ করছে। তারা অভিযোগ করেন, দীর্ঘদিন ধরে মেয়েদের রাস্তাঘাটে উত্ত্যক্ত করা হলেও কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এ কারণে এ ধরনের ঘটনা বাড়ছে।
একজন স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, “স্কুলপড়ুয়া মেয়েরা নিরাপদ নয়। প্রশাসন যদি দ্রুত ব্যবস্থা না নেয়, তাহলে অভিভাবকরা আরও অসহায় হয়ে পড়বেন।” চারঘাটের এ ঘটনা আবারও দেখিয়ে দিল গ্রামীণ এলাকায় নারী ও কিশোরীদের নিরাপত্তাহীনতা কতটা প্রকট। অভিভাবকের প্রতিবাদকে রক্তাক্ত হামলার মাধ্যমে দমন করার ঘটনা সমাজে চরম উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। স্থানীয়রা দ্রুত আসামিদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।
Leave a comment