Home জাতীয় অপরাধ বিদেশি আইনজীবী নিয়োগে ট্রাইব্যুনালের অনুমতি চাইলেন সালমান ও আনিসুল
অপরাধআইন-বিচারজাতীয়রাজনীতি

বিদেশি আইনজীবী নিয়োগে ট্রাইব্যুনালের অনুমতি চাইলেন সালমান ও আনিসুল

Share
Share

মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় নিজেদের আইনি প্রতিরক্ষাকে আরও শক্তিশালী করতে আন্তর্জাতিক আইনজীবী নিয়োগের অনুমতি চেয়েছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান ও সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। বুধবার (১০ ডিসেম্বর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১–এ তাদের পক্ষে এই আবেদন করেন সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনসুরুল হক চৌধুরী।

বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বে দুই সদস্যের বিচারিক প্যানেল এদিন মামলার শুনানি গ্রহণ করেন। শুনানি শুরুর পরপরই আসামিপক্ষ বিদেশি আইনজীবী নিয়োগের আবেদন উপস্থাপন করলে ট্রাইব্যুনাল জানায়, এ বিষয়ে পরবর্তী সময়ে আদেশ দেওয়া হবে। একই সঙ্গে প্রসিকিউশন ও আসামিপক্ষের মধ্যে এ আবেদনকে কেন্দ্র করে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করা হয়।

শুনানিতে চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠনের শুনানির জন্য অতিরিক্ত সময় চান। আদালত তার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আগামী ১৭ ডিসেম্বর পরবর্তী শুনানির তারিখ নির্ধারণ করেন। এর পর আসামিপক্ষের আবারও যুক্তি তুলে ধরেন মনসুরুল হক চৌধুরী, যেখানে তিনি বিদেশি আইনজীবী আনার যৌক্তিকতা ব্যাখ্যা করেন।

শুনানি শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে মনসুরুল হক চৌধুরী বলেন, বিদেশি আইনজীবী নিয়োগ করতে হলে প্রথমে ট্রাইব্যুনালের অনুমতি নিতে হয়। পরবর্তীতে বাংলাদেশ বার কাউন্সিলে আনুষ্ঠানিক আবেদন করতে হয়। বার কাউন্সিল অনুমতি দিলে বিদেশি আইনজীবীর আইনি লড়াইয়ে অংশগ্রহণে আর কোনো বাধা থাকে না। তিনি আরও জানান, ট্রাইব্যুনালে এ বিষয়ে আবেদন করা হলে প্রসিকিউশন আপত্তি তোলে। তারা আইনের ব্যাখ্যা উপস্থাপন করেছে। আদালত সবদিক বিবেচনা করেই সিদ্ধান্ত দেবে বলে জানিয়েছেন।

এর আগে ৪ ডিসেম্বর এই মামলায় সালমান এফ রহমান ও আনিসুল হকের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ (ফরমাল চার্জ) দাখিল করে প্রসিকিউশন। পরবর্তীতে শুনানি শেষে ট্রাইব্যুনাল অভিযোগ আমলে নেয়।

প্রসিকিউশনের অভিযোগ, ২০২৪ সালের জুলাই মাসে দেশজুড়ে ঘটে যাওয়া ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের সময় আনিসুল হক এবং সালমান এফ রহমান ফোনালাপে আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেওয়ার নির্দেশনা দেন। অভিযোগে বলা হয়, কারফিউ চলাকালে আন্দোলনকারীদের “শেষ করে দিতে হবে” — এ ধরনের উসকানিমূলক বক্তব্য দেন তারা। তাদের কথাবার্তার পর ১৯ জুলাইসহ বিভিন্ন দিনে ঢাকাসহ দেশের নানা স্থানে নিরাপত্তা বাহিনীর নির্বিচারে গুলি চালনায় বহু ছাত্র ও সাধারণ মানুষ নিহত হয় বলে দাবি করেছে প্রসিকিউশন।
প্রসিকিউশন আরও জানায়, এ উসকানিমূলক বক্তব্য হত্যাকাণ্ড সংঘটনে ভূমিকা রেখেছে এবং অভিযুক্ত দুজন সেই সময়কার সহিংসতার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।

গত বছরের ১৩ আগস্ট পালানোর চেষ্টা করার সময় গ্রেপ্তার হন সালমান এফ রহমান ও আনিসুল হক। এরপর থেকে তারা বিভিন্ন মামলায় কারাবন্দী আছেন। তাদের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধ ছাড়াও আরও কয়েকটি মামলার তদন্ত ও শুনানি চলছে।

Share

Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Don't Miss

ভাঙ্গায় সড়ক দুর্ঘটনায় তিন ভাইয়ের মর্মান্তিক মৃত্যু

ফরিদপুরের ভাঙ্গায় সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারানো কুষ্টিয়ার কুমারখালীর তিন ভাইয়ের দাফন শেষ হয়েছে। রোববার (৭ ডিসেম্বর) দুপুরে জানাজা শেষে তাদের কুমারখালীর সদকী ইউনিয়নের...

কম্বোডিয়ার অভ্যন্তরে থাইল্যান্ডের বিমান হামলা, যুদ্ধবিরতি হুমকির মুখে

থাইল্যান্ড–কম্বোডিয়া সীমান্তে টানা উত্তেজনার পর কম্বোডিয়ার অভ্যন্তরে বিমান হামলা চালিয়েছে থাই প্রতিরক্ষা বাহিনী। আজ সোমবার ভোরের দিকে এ হামলা পরিচালনা করা হয়েছে। থাইল্যান্ডের...

Related Articles

সাতক্ষীরায় ৮ বছরের শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগ

সাতক্ষীরার দেবহাটায় ৮ বছরের এক শিশুকে দীর্ঘদিন ধরে দফায় দফায় ধর্ষণের অভিযোগ...

কক্সবাজারে যুবদলের দুই নেতাকে গুলি

মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) রাতে কক্সবাজার শহরের বাস টার্মিনাল এলাকায় দুর্বৃত্তদের গুলিতে যুবদলের...

ড্রাইভিং শিখতে গিয়ে প্রাণ গেল যুবকের

হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলায় প্রাইভেটকার চালানো শিখতে গিয়ে হিমেল (২০) নামে এক যুবকের...

খালেদা জিয়ার জন্য উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন শেখ হাসিনা : আইএএনএস-এর প্রতিবেদন

ভারতীয় বার্তা সংস্থা আইএএনএস-এর এক বিশেষ প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী...