বাংলাদেশের স্বাধীনতা-উত্তর কূটনৈতিক ইতিহাসে ১০ মে, ১৯৭২ এক অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ দিন। এই দিন লাতিন আমেরিকার অন্যতম প্রভাবশালী দেশ মেক্সিকো আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশকে একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। এটি ছিল বিশ্বের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি, যা সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশের বৈশ্বিক অবস্থানকে আরও সুদৃঢ় ও মর্যাদাপূর্ণ করে তোলে।
স্বাধীনতা অর্জনের মাত্র পাঁচ মাসের মাথায় মেক্সিকোর এই সমর্থন ছিল বাংলাদেশের জন্য এক দৃষ্টান্তমূলক ঘটনা। এর ফলে শুধু কূটনৈতিক সমীকরণই পাল্টে যায়নি, বরং দক্ষিণ এশিয়া ও লাতিন আমেরিকার মধ্যকার নতুন এক বন্ধুত্বের সূচনা হয়।
সেদিন মেক্সিকো সিটি থেকে পাঠানো এক আনুষ্ঠানিক ঘোষণায় জানানো হয়, “বাংলাদেশ তার জনগণের আত্মত্যাগ ও সংগ্রামের মাধ্যমে যে স্বাধীনতা অর্জন করেছে, মেক্সিকো সরকার সেটিকে স্বীকৃতি দিয়ে সম্মান জানাচ্ছে।” এই ঘোষণার পর বাংলাদেশের তৎকালীন সরকার কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে এবং দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের পথ সুগম হয়।
বিশ্লেষকদের মতে, পশ্চিমা জোটভুক্ত অনেক দেশ যখন তখনো বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দিতে দ্বিধাগ্রস্ত, মেক্সিকোর এই সাহসী পদক্ষেপ তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোর মধ্যে একটি ইতিবাচক বার্তা পৌঁছে দেয়। এটি ছিল এমন এক সময়, যখন আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি সংগ্রহ করাই ছিল নবীন বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান চ্যালেঞ্জ।
Leave a comment