ধর্মেন্দ্রর প্রয়াণে বলিউডের প্রথম সারির তারকারা সামাজিক মাধ্যমে শোক প্রকাশ করেছেন। প্রবীণ অভিনেত্রী সালমা আগা এনডিটিভিকে বলেন,“ধর্মেন্দ্রজি স্বপ্নের মতো একজন মানুষ ছিলেন। পর্দায় যেমন, ব্যক্তিজীবনেও তেমন উজ্জ্বল। এমন মানুষ কখনো চলে যান না—তারা ইতিহাস হয়ে থাকেন।”
দিলীপ কুমারের স্ত্রী সায়রা বানু স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন:“তার মৃত্যু মেনে নেওয়া অসম্ভব। দিলীপ সাহেব তাকে ছোট ভাইয়ের মতো দেখতেন। তিনি প্রায়ই আমাদের বাড়িতে আসতেন—আড্ডা, খাওয়াদাওয়া, হাসি-মজা… আজ আর কিছুই বলার মতো শক্তি নেই আমার। তাকে সারাজীবন মনে রাখব।”
অভিনেত্রী মৌসুমী চ্যাটার্জি বলেন,“তিনি ‘হিম্যান’ ছিলেন ঠিকই, কিন্তু হৃদয়ের দিক থেকে ছিলেন অত্যন্ত কোমল। পরিবারপ্রেমী, উদার ও মাটির মানুষ ছিলেন তিনি।” নির্মাতা করণ জোহর লিখেছেন—“একটি যুগের সমাপ্তি। তিনি ছিলেন প্রকৃত মেগাস্টার, মূলধারার সিনেমার সত্যিকারের হিরো। পর্দায় যেমন কিংবদন্তি, মানুষ হিসেবেও ছিলেন সেরা। পুরো ইন্ডাস্ট্রি তাকে ভালবাসত।”
এ ছাড়াও অমিতাভ বচ্চন, অভিষেক বচ্চন, রণবীর সিং, দীপিকা পাড়ুকোন, কারিনা কাপুর খান, কাজল, কিয়ারা আদভানি, মণীশ মলহোত্রাসহ অসংখ্য তারকা সামাজিক মাধ্যমে শোক জানিয়েছেন।
গত ৩১ অক্টোবর শ্বাসকষ্ট অনুভব করলে ধর্মেন্দ্রকে মুম্বাইয়ের ব্রিচ ক্যান্ডি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থা খারাপ হলে তাকে আইসিইউতে রাখা হয়। টানা চিকিৎসার পর ১২ নভেম্বর তিনি বাড়ি ফিরেছিলেন। সবাই আশা করেছিলেন তিনি আবার সুস্থ হয়ে উঠবেন। কিন্তু আজ সকালে নিজ বাসায়ই শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন এই বর্ষীয়ান অভিনেতা।
ধর্মেন্দ্রর অভিনীত শেষ সিনেমা শ্রীরাম রাঘবন পরিচালিত যুদ্ধভিত্তিক ড্রামা ‘ইক্কিস’, যেখানে প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছেন অমিতাভ বচ্চনের নাতি অগস্ত্য নন্দা। ছবিটি মুক্তি পাবে ২০২৫ সালের ২৫ ডিসেম্বর। এই সিনেমা এখন ধর্মেন্দ্রর অভিনয়-জীবনের শেষ মাইলফলক হিসেবে ইতিহাসে জায়গা করে নেবে।
প্রায় ছয় দশক দীর্ঘ ক্যারিয়ারে ধর্মেন্দ্র উপহার দিয়েছেন ‘শোলে’, ‘সীতা অউর গীতা’, ‘চুপকে চুপকে’, ‘ধূপ ছাঁয়াঁ’, ‘বন্ধু ও কনস্টেবল’-এর মতো কালজয়ী অসংখ্য চলচ্চিত্র। তার সারল্য, হাসি, অ্যাকশন-পারদর্শিতা আর পর্দার ক্যারিশমা তাকে এনে দিয়েছে ‘হিম্যান’ উপাধি। তার চলে যাওয়া শুধু চলচ্চিত্রের ক্ষতি নয়—ভারতের সংস্কৃতি ও আবেগেও এক শূন্যতা তৈরি করলো। কোটি ভক্তের হৃদয়ে তিনি আজও অমলিন, এবং সেখানে তিনি অমর হয়েই থাকবেন।
Leave a comment