উৎসবের হাওয়া বইছে পাহাড়ি জনপদে । বান্দরবানে সাঙ্গু নদীর বুকে ফুল ভাসিয়ে বরণ করে নেওয়া হলো পার্বত্য চট্টগ্রামের অন্যতম বৃহৎ সামাজিক উৎসব বিজু ও বিষু। চাকমা ও তঞ্চঙ্গ্যা সম্প্রদায়ের ঐতিহ্যবাহী এ উৎসবের সূচনা হয় জলবুদ্ধ ও ‘মা’ গঙ্গাকে ফুল নিবেদনের মধ্য দিয়ে।
হাজারো চাকমা ও তঞ্চঙ্গ্যা সম্প্রদায়ের নারী, পুরুষ ও শিশু শনিবার সকাল থেকে সাঙ্গু নদীর তীরে ভিড় করতে থাকেন। ভোর থেকেই ফুল সংগ্রহ করে কলাপাতায় সাজিয়ে তারা নদীতীরে এসে জড়ো হন। পরে নদীতে ফুল ভাসিয়ে, মোমবাতি জ্বালিয়ে অতীতের ভুলভ্রান্তির জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করেন এবং নতুন বছরের সুখ-শান্তি কামনা করেন।
তাদের মতে, ১২ এপ্রিল নদীতে পূজা ও ফুল নিবেদনের মাধ্যমে শুরু হলো বিজু উৎসব।
১৩ এপ্রিল পালিত হবে মূল বিজু-ওইদিন ঘরে ঘরে নানা রকম খাবারের আয়োজন করা হবে। একে অপরের বাড়িতে নিমন্ত্রণ ছাড়াই যাওয়া যায়। যদিও আধুনিক সময়ে অনেকেই আনুষ্ঠানিকভাবে নিমন্ত্রণ করেন। ঘনিষ্ঠ আত্মীয়স্বজন, মুরব্বি ও বয়োজ্যেষ্ঠদের দাওয়াত করে আপ্যায়ন করেন।
‘পাচন’ তরকারি হলো চাকমা খাবারের মূল আকর্ষণ । যা শতাধিক প্রকারের সবজি, মাছ ও শুঁটকি দিয়ে তৈরি করা হয়। ১৪ এপ্রিল তরুণ-তরুণীরা গুরুজনদের গোসল করিয়ে তাদের আশীর্বাদ গ্রহণ করবেন। একই দিনে ভিক্ষু-সংঘকে ‘ফাং’ (নিমন্ত্রণ) জানিয়ে ঘরের মঙ্গল কামনায় মঙ্গল সূত্র শ্রবণ করে থাকেন তারা।
চাকমা তরুণ সিদ্ধার্থ চাকমা বলেন, জলবুদ্ধ ও মা গঙ্গাদেবীর কাছে অতীতের ভুলভ্রান্তির জন্য ক্ষমা চেয়ে নতুন বছরের মঙ্গল কামনায় আমরা ফুল বিজু পালন করি। পূজারি নাজিব তঞ্চঙ্গ্যা জানান, চাকমা ও তঞ্চঙ্গ্যা সম্প্রদায়ের মানুষ প্রতি বছর সাঙ্গু নদীতে ফুল বিজু-ফুল বিষু পালন করেন। মা গঙ্গাদেবীর কাছে প্রার্থনা করি যেন সবাই সুখে-শান্তিতে থাকতে পারি।
বান্দরবানের পুলিশ সুপার মো. শহিদুল্লাহ কাওছার জানিয়েছেন , উৎসব ঘিরে যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে ।
Leave a comment