ভারতীয় উড়োজাহাজের জন্য আকাশসীমা বন্ধ করে দিয়েছে পাকিস্তান, এবং পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় ভারতও পাকিস্তানের জন্য একই ব্যবস্থা নিয়েছে। দুপক্ষের এ সিদ্ধান্তের ফলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতির মুখে পড়ছে ভারতের বিমান সংস্থাগুলো। পাকিস্তানের তুলনায় ভারতীয় উড়োজাহাজগুলোর ওপর অনেক বড় প্রভাব পড়ছে, কারণ প্রতিদিন ২০০ থেকে ৩০০ ভারতীয় ফ্লাইট পাকিস্তানের আকাশসীমা ব্যবহার করে ইউরোপ, মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আমেরিকার দিকে যাতায়াত করে।
পাকিস্তানের জাতীয় নিরাপত্তা কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, গত ২৪ এপ্রিল থেকে শুরু হয়ে ২৩ মে পর্যন্ত আকাশসীমা বন্ধ থাকবে। বাণিজ্যিক এবং সামরিক, উভয় ধরনের উড়োজাহাজের ওপরই এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর। পাকিস্তানের এ সিদ্ধান্তের ফলে শত শত ভারতীয় ফ্লাইটকে এখন ব্যয়বহুল বিকল্প রুট ব্যবহার করতে হচ্ছে, ফলে বাড়তি জ্বালানি খরচ এবং মাঝপথে পুনরায় জ্বালানি নেওয়ার প্রয়োজন দেখা দিচ্ছে।
এয়ার ইন্ডিয়ার টরন্টো-দিল্লি ফ্লাইটকে কোপেনহেগেনে থামতে হয়েছে, প্যারিস ও লন্ডনের ফ্লাইটগুলিকে আবু ধাবিতে থামতে হচ্ছে। অন্যদিকে, শারজাহ-অমৃতসর রুটের একটি ফ্লাইট পাকিস্তানের আকাশসীমা এড়িয়ে ঘুরপথে যেতে বাধ্য হয়েছে এবং অন্য ফ্লাইটগুলোকেও অতিরিক্ত জ্বালানি নিতে আহমেদাবাদে অবতরণ করতে হয়েছে।
ভারত নিয়ন্ত্রিত জম্মু ও কাশ্মীরের পেহেলগামে পর্যটকদের ওপর হামলার ঘটনায় ভারত ইসলামাবাদের বিরুদ্ধে জড়িত থাকার অভিযোগ তুলেছে, যদিও এখনো কোনো প্রমাণ উপস্থাপন করা হয়নি। হামলার জের ধরেই ভারত পাকিস্তানের বিরুদ্ধে পাঁচটি কড়া পদক্ষেপ নেয়, যার জবাবে পাকিস্তানও পাল্টা ব্যবস্থা নেয়, যার একটি হলো আকাশসীমা বন্ধ।
পাকিস্তান জানিয়েছে, ভারতের আকাশসীমা বন্ধ থাকায় তাদের ফ্লাইটে তেমন প্রভাব পড়বে না, কারণ পূর্বমুখী মাত্র একটি রুট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং তারা সহজেই চীনের আকাশসীমা ব্যবহার করে বিকল্প ব্যবস্থা নিতে পারবে। পাকিস্তানের তথ্যমন্ত্রী আতাউল্লাহ তারার বলেন, ভারতের বিমান সংস্থাগুলো এ ঘটনায় লাখ লাখ ডলারের ক্ষতির সম্মুখীন হবে।
পূর্বেও ১৯৯৯ সালের কারগিল যুদ্ধ এবং ২০১৯ সালের পুলওয়ামা হামলার পর একই ধরনের আকাশসীমা বন্ধের ঘটনা ঘটেছিল, যেখানে ভারতকেই তুলনামূলকভাবে বেশি ভুগতে হয়েছিল। এবারও ইতিহাস পুনরাবৃত্তি হচ্ছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা। দুই দেশের মধ্যে চলমান উত্তেজনার মধ্যে এই আকাশসীমা সংকট পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে।
Leave a comment