পাকিস্তানের সেনাপ্রধান জেনারেল আসিম মুনিরকে ফিল্ড মার্শাল পদে উন্নীত করা হয়েছে। মঙ্গলবার দেশটির প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় এক আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে এ ঘোষণা দেয়। ৬ দশক পর আবারও পাকিস্তানের ইতিহাসে কোনো সেনা কর্মকর্তাকে এই সর্বোচ্চ সামরিক মর্যাদায় অভিষিক্ত করা হলো। এর আগে কেবল স্বৈরশাসক জেনারেল আইয়ুব খানই ১৯৬৫ সালে নিজেকে ফিল্ড মার্শাল পদে উন্নীত করেছিলেন।
পদোন্নতির সিদ্ধান্ত অনুমোদন করেছে প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের নেতৃত্বাধীন মন্ত্রিসভা। পাকিস্তান-ভারত উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে এমন সময় এই ঘোষণা এলো, যখন কাশ্মীরের পেহেলগামে বন্দুকধারীদের হামলার জেরে দুই দেশের মধ্যে পাল্টাপাল্টি হামলার ঘটনা ঘটেছে। গত তিন দশকের মধ্যে সবচেয়ে তীব্র সীমান্ত উত্তেজনা ও সংঘর্ষের প্রেক্ষাপটে আসিম মুনিরকে এই মর্যাদা দেওয়া হলো বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
ফিল্ড মার্শাল পদটি পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীর পাঁচ–তারকা বিশিষ্ট সর্বোচ্চ সম্মান। এ পদমর্যাদা সাধারণত অসাধারণ সামরিক নেতৃত্ব, যুদ্ধক্ষেত্রে কৃতিত্ব এবং কৌশলগত প্রজ্ঞার স্বীকৃতিস্বরূপ দেওয়া হয়ে থাকে। পাকিস্তানের এক নিরাপত্তা কর্মকর্তা জানিয়েছেন, সেনাপ্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে গিয়েই আসিম মুনির ফিল্ড মার্শাল হিসেবে কাজ করবেন।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়, ‘জাতীয় নিরাপত্তা সুরক্ষা, শত্রুর মোকাবিলা এবং আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে জেনারেল আসিম মুনিরের কৌশলগত নেতৃত্ব, সাহসিকতা ও দায়িত্বশীলতার স্বীকৃতিস্বরূপ তাঁকে এই সম্মান দেওয়া হয়েছে।’
একই সঙ্গে পাকিস্তানের বিমান বাহিনীর প্রধান এয়ার মার্শাল জহির আহমেদ বাবর সিধুর মেয়াদও বাড়ানো হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে মন্ত্রিসভা।
২০২২ সালের নভেম্বরে সেনাপ্রধান হিসেবে দায়িত্ব নেন আসিম মুনির। পাকিস্তানের প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী, সেনাপ্রধানদের মেয়াদ হয় তিন বছর। তবে ২০২৩ সালের নভেম্বরে পার্লামেন্টে আইন সংশোধন করে তাঁর মেয়াদ বাড়িয়ে পাঁচ বছর করা হয়। দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই সামরিক শৃঙ্খলা, সীমান্ত নিরাপত্তা এবং আঞ্চলিক রাজনীতিতে প্রভাব বিস্তারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছেন তিনি।
পদোন্নতির পর এক প্রতিক্রিয়ায় আসিম মুনির বলেন, “এটি কেবল আমার ব্যক্তিগত অর্জন নয়, বরং পুরো পাকিস্তান এবং আমাদের সশস্ত্র বাহিনীর জন্য এক গর্বের বিষয়।” তাঁর এই নতুন পদ মর্যাদা পাকিস্তানের ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক ও সামরিক দৃষ্টিভঙ্গিতে নতুন মাত্রা যোগ করতে পারে বলে মনে করছেন আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা।
Leave a comment