নেত্রকোণার আটপাড়া উপজেলায় তিনদিন আগে নিখোঁজ হওয়া এক বিকাশকর্মীর মরদেহ মগড়া নদী থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। হাত-পা বাঁধা অবস্থায় যুবকের মরদেহ উদ্ধার হওয়ার ঘটনাটি এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে।
মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) বিকেলে উপজেলার স্বরমুশিয়া ইউনিয়নের ঘাগড়া গ্রামের হাদিস মিয়ার বাড়ির পেছনের মগড়া নদী থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। নিহতের নাম মো. রিজন মিয়া (২২), তিনি নেত্রকোণা জেলা শহরের নাগড়া শেখপাড়া এলাকার রফিকুল ইসলামের ছেলে।
পুলিশ জানায়, গত রোববার সকালে প্রতিদিনের মতোই বিকাশ এজেন্ট হিসেবে কাজ করা রিজন মিয়া বাসা থেকে বের হন। এ সময় তাঁর সঙ্গে প্রায় ১২ লাখ ৫০ হাজার টাকা ছিল। দুপুরের পর থেকেই তাঁর সঙ্গে আর কোনো যোগাযোগ করা যাচ্ছিল না।
পরিবার ও সহকর্মীরা তাঁকে খুঁজে না পেয়ে বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত একাধিকবার ফোন করার চেষ্টা করেন, কিন্তু ফোন বন্ধ পেলে সন্দেহ বাড়ে। পরে সেদিন রাতেই পরিবারের পক্ষ থেকে নেত্রকোণা সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়।
মঙ্গলবার বিকেলে স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা মগড়া নদীর পানিতে ভাসমান একটি মরদেহ দেখতে পান। কাছাকাছি এসে তারা দেখতে পান মরদেহটির হাত ও পা দড়ি দিয়ে বাঁধা। খবর পেয়ে আটপাড়া থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহটি উদ্ধার করে।
আটপাড়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) প্রদীপ কুমার চক্রবর্তী বলেন,”প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, এটি একটি হত্যাকাণ্ড। মরদেহের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে এবং পরিচয় নিশ্চিত করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ নেত্রকোণা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।”
পুলিশের একাধিক সূত্র জানিয়েছে, নিহতের সঙ্গে থাকা বড় অঙ্কের নগদ অর্থ ছিনতাইয়ের উদ্দেশ্যেই এই হত্যাকাণ্ড ঘটতে পারে। তবে এখনো টাকার কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি।
ঘটনার পর থেকেই স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। বিকাশ ও অন্যান্য মোবাইল ব্যাংকিং এজেন্টরা নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন। অনেকেই জানিয়েছেন, বড় অঙ্কের টাকা নিয়ে চলাফেরার সময় যথাযথ নিরাপত্তা ব্যবস্থা না থাকায় তারা ঝুঁকিতে রয়েছেন।
পুলিশ বলেছে, হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান শুরু হয়েছে। এলাকায় সিসিটিভি ফুটেজ, মোবাইল ফোনের কল রেকর্ড এবং প্রত্যক্ষদর্শীদের বক্তব্য সংগ্রহ করা হচ্ছে।
নেত্রকোণা জেলা পুলিশের একটি বিশেষ দল মামলার তদন্তে কাজ করছে। কর্মকর্তারা আশা করছেন, শিগগিরই হত্যার রহস্য উদঘাটন হবে এবং অপরাধীরা আইনের আওতায় আসবে।
Leave a comment