নড়াইলের কালিয়া উপজেলায় সেপটিক ট্যাংক থেকে জুনায়েদ সর্দার (৫) নামে এক শিশুর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে উপজেলার বাবরা-হাচলা ইউনিয়নের কাঞ্চনপুর গ্রামে এ হৃদয়বিদারক ঘটনা ঘটে। শিশুটি উপজেলার পুরুলিয়া ইউনিয়নের দেওয়াডাঙ্গা গ্রামের আলমগীর সর্দারের ছেলে।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, সেদিন সকালে মা’য়ের সঙ্গে মামাবাড়িতে বেড়াতে যায় জুনায়েদ। দুপুরে মা বাজারে গেলে শিশুটি নানার সঙ্গে বাড়িতে অবস্থান করছিল। খেলার ফাঁকে ফড়িং ধরতে গিয়ে সে হঠাৎ নিখোঁজ হয়ে যায়। দীর্ঘক্ষণ খোঁজাখুঁজির পরও তাকে পাওয়া না গেলে পরিবারের লোকজন চারপাশে খোঁজা শুরু করে।
কিছুক্ষণ পর স্থানীয়রা বাড়ির পেছনে সেপটিক ট্যাংকের ভাঙা ঢাকনা খোলা অবস্থায় দেখতে পান। সেখানে পড়ে থাকা জুনায়েদের জুতা দেখে সন্দেহ হয় তাদের। পরে ট্যাংকের ভেতরে খুঁজে পাওয়া যায় শিশুটির নিথর দেহ।
এ ঘটনায় এলাকায় শোকের পাশাপাশি আতঙ্কও বিরাজ করছে। গ্রামবাসীর দাবি, বাড়ির পেছনের ওই সেপটিক ট্যাংকটির ঢাকনা দীর্ঘদিন ধরেই ভাঙা ছিল। শিশুদের নিরাপত্তার স্বার্থে আগেই এটি মেরামত করা উচিত ছিল।
একজন স্থানীয় বাসিন্দা জানান, “শিশুটি খুব প্রাণবন্ত ছিল। দুপুরে তাকে সবার সঙ্গে খেলতে দেখেছি। কয়েক ঘণ্টার মধ্যে তার লাশ উদ্ধার হবে, তা ভাবতেই পারছি না।”
ঘটনার পরপরই কালিয়া থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, “খবর পেয়ে আমরা দ্রুত ঘটনাস্থলে যাই। শিশুর মৃত্যুর ঘটনায় পরিবার থেকে কোনো অভিযোগ করা হয়নি। এ বিষয়ে থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।” তিনি আরও বলেন, প্রাথমিকভাবে এটি একটি দুর্ঘটনা বলেই মনে হচ্ছে। তবে তদন্ত শেষে বিস্তারিত জানা যাবে।
একটি ক্ষুদ্র অবহেলা কিংবা অব্যবস্থাপনার কারণে পাঁচ বছরের নিষ্পাপ শিশুর প্রাণ হারানোর ঘটনায় নড়াইলের কাঞ্চনপুর গ্রাম আজ গভীর শোকে নিমজ্জিত। জুনায়েদের পরিবারসহ পুরো গ্রামবাসী এ ঘটনার জন্য শোকাহত। ভবিষ্যতে এ ধরনের দুর্ঘটনা এড়াতে সবার মধ্যে সচেতনতা বাড়ানোর পাশাপাশি নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদারের আহ্বান জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
Leave a comment