নেপালের প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা অলি বৃহস্পতিবার হেলিকপ্টারে করে সাতজন মন্ত্রী ও পরিবারের সদস্যদের নিয়ে দেশ ছাড়ার পর থেকে দেশটিতে অস্থিরতা চরমে পৌঁছেছে। আন্দোলনকারীরা রাজধানীর নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে, সরকারি দলীয় কার্যালয়সহ মন্ত্রীদের বাসভবনে আগুন দিয়েছে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত থেকে শুরু হলেও ক্ষোভ এখন দুর্নীতি ও বেকারত্ববিরোধী গণআন্দোলনে পরিণত হয়েছে।
এই দৃশ্য দক্ষিণ এশিয়ার সাম্প্রতিক রাজনৈতিক উত্থান–পতনের ধারাবাহিকতার সঙ্গে মিলে যাচ্ছে।
• শ্রীলংকা: দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক রাজবংশ অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের দায়ে ক্ষমতাচ্যুত হয়। জ্বালানি সংকট, অতি মুদ্রাস্ফীতি ও খাদ্য ঘাটতির কারণে স্বতঃস্ফূর্ত আন্দোলনে দেশ ছাড়তে বাধ্য হন প্রেসিডেন্ট রাজাপাকসে।
• বাংলাদেশ: সীমিত কোটা সংস্কার আন্দোলন দমন-পীড়নের মুখে গণঅভ্যুত্থানে রূপ নেয়। বৈষম্যবিরোধী দাবিতে সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণে গত ৫ আগস্ট সরকার পতন ঘটে।
• নেপাল: ফেসবুক, ইউটিউবসহ ২৬টি প্ল্যাটফর্ম বন্ধের সরকারি সিদ্ধান্ত ছিল আগুনের স্ফুলিঙ্গ। তবে মূল ক্ষোভ জমেছে দুর্নীতি, বেকারত্ব এবং জীবিকা সংকট নিয়ে।
এখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু ভারত। দেশটির গণতন্ত্র দীর্ঘদিন ধরে নির্বাচনকেন্দ্রিক হলেও সাম্প্রতিক সময়ে ভোট প্রক্রিয়া ও প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতি মানুষের আস্থা প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে। বিশ্লেষকদের মতে, ভারতীয় গণতন্ত্রের শক্তিশালী কাঠামোর কারণে হঠাৎ করে শ্রীলংকা, বাংলাদেশ বা নেপালের মতো বিস্ফোরক পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার ঝুঁকি তুলনামূলকভাবে কম। তবে সামাজিক বৈষম্য, বেকারত্ব ও রাজনৈতিক অসন্তোষ যদি আরও ঘনীভূত হয়, তাহলে বড় ধরনের বিক্ষোভ একেবারেই অসম্ভব নয়।
দক্ষিণ এশিয়া একের পর এক দেশ গণবিস্ফোরণের অভিজ্ঞতা অর্জন করছে। তাই ভারতের ক্ষেত্রেও সম্ভাবনা ‘শূন্য’ নয়, বরং প্রশ্ন এখন কেবল সময়ের।
Leave a comment