তাইওয়ান প্রণালীতে চীনের সামরিক কার্যক্রম গত কয়েক মাসে উদ্বেগজনক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। পেন্টাগন এবং পশ্চিমা গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর মতে, চীন তাইওয়ান দখলের জন্য সক্রিয়ভাবে প্রস্তুতি নিচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন যে, ইউক্রেন ও মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পৃক্ততার সুযোগ নিয়ে চীন আগামী ছয় মাসের মধ্যে তাইওয়ানে সামরিক অভিযান চালাতে পারে।
চীন তিনটি কৌশল অবলম্বন করতে পারে গোয়েন্দা সূত্রের মতে। প্রথমত, দ্রুত ও নিষ্পত্তিমূলক হামলার মাধ্যমে তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংস করা। এজন্য ব্যাপক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা, সাইবার আক্রমণ এবং দ্রুত সৈন্য অবতরণের পরিকল্পনা থাকতে পারে। দ্বিতীয়ত, দীর্ঘমেয়াদি অবরোধ কৌশল – যেখানে চীনা নৌবাহিনী দ্বীপটিকে সম্পূর্ণ ঘিরে ফেলে অর্থনৈতিকভাবে পঙ্গু করে দিতে পারে। তৃতীয়ত, সর্বাত্মক যুদ্ধের মাধ্যমে শুধু তাইওয়ান নয়, জাপান ও ফিলিপাইনে অবস্থিত মার্কিন ঘাঁটিগুলোকেও লক্ষ্য করা হতে পারে।
“প্রয়োজনে সামরিক শক্তি ব্যবহার করেও তাইওয়ানকে চীনের সাথে একীভূত করা হবে’’ বলে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং বারবার স্পষ্ট করেছেন ।
গত এপ্রিল মাসে তাইওয়ান প্রণালীতে চীনের ব্যাপক সামরিক মহড়া অনেক বিশ্লেষককে এ ধারণা দিয়েছে যে, বেইজিং শুধু ভয় দেখানো নয়, বরং বাস্তব যুদ্ধের প্রস্তুতি নিচ্ছে। বিশেষ করে সাম্প্রতিক উদ্ভাবিত বিশেষ রণতরী এবং বিমান হামলার সক্ষমতা বাড়ানোর ঘটনাগুলো এই আশঙ্কাকে আরও জোরালো করেছে।
বর্তমান বিশ্ব পরিস্থিতি চীনের জন্য অনুকূল বলে মনে করা হচ্ছে। ইউক্রেন যুদ্ধ এবং ইসরাইল-ফিলিস্তিন সংকটে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পৃক্ততা ওয়াশিংটনের মনোযোগ ভাগ করে দিয়েছে। অনেক বিশ্লেষকের মতে, এই সুযোগটি কাজে লাগাতেই চীন তাইওয়ান ইস্যুতে আরও আগ্রাসী ভূমিকা নিতে পারে।
গোয়েন্দা সূত্রের বরাদ দিয়ে জানা গেছে আগামী ১৮০ দিন অর্থাৎ ছয় মাসের মধ্যে তাইওয়ান দখলে হামলা চালাতে পারে চীন।
পরিস্থিতি যে দ্রুত উত্তপ্ত হচ্ছে, তা সাম্প্রতিক গোয়েন্দা তথ্য এবং চীনের সামরিক প্রস্তুতিই প্রমাণ করে। কূটনৈতিক সমাধান না পেলে আগামী মাসগুলোতে এই অঞ্চলে বড় ধরনের সংঘাতের আশঙ্কা ক্রমেই বাড়ছে। বিশ্ব সম্প্রদায়ের জন্য এটি একটি গুরুতর সতর্কবার্তা, কারণ তাইওয়ান সংকট শুধু আঞ্চলিক বিষয় নয়, বরং বৈশ্বিক নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতার জন্য একটি বড় হুমকি।
Leave a comment