যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাম্প্রতিক শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত নিয়ে মুখ খুলেছেন তাঁরই ঘনিষ্ঠ কিছু ধনকুবের ব্যবসায়ী। তাঁরা সতর্ক করেছেন, এই নীতির ফলে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি মারাত্মক ঝুঁকির মুখে পড়বে এবং বৈশ্বিক বাণিজ্যে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান দুর্বল হবে।
বিশিষ্ট বিনিয়োগকারী ও ট্রাম্প-সমর্থক বিল অকম্যান সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘এক্স’-এ দেওয়া এক পোস্টে কড়া ভাষায় বলেন, “যদি নতুন শুল্ক কার্যকর হয়, তবে আমরা একটি অর্থনৈতিক পরমাণু যুদ্ধের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি।” তিনি উল্লেখ করেন, এই শুল্ক বিনিয়োগকে নিরুৎসাহিত করবে এবং ভোক্তারা ব্যয় কমিয়ে দেবে, যার ফলে অর্থনৈতিক স্থবিরতা দেখা দেবে।
অকম্যান বলেন, “বিশ্বজুড়ে আমাদের যে সুনাম রয়েছে, এই পদক্ষেপে তা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে এবং তা পুনরুদ্ধারে বহু বছর, এমনকি দশক লেগে যেতে পারে।”
ট্রাম্প ২ এপ্রিল ঘোষণা দেন যে, যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করা সব পণ্যের ওপর সর্বনিম্ন ১০ শতাংশ থেকে সর্বোচ্চ ৫০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপ করা হবে। এর মধ্যে কিছু শুল্ক ইতিমধ্যে কার্যকর হয়েছে । তিনি দাবি করেন, এর মাধ্যমে বাকি বিশ্বের সঙ্গে বাণিজ্যে ভারসাম্য আনা সম্ভব হবে।
ট্রাম্পের আরেক ঘনিষ্ঠ, জেপিমরগ্যান চেজ–এর চেয়ারম্যান ও সিইও জেমি ডিমোন তাঁর শেয়ারহোল্ডারদের পাঠানো বার্ষিক চিঠিতে লিখেছেন, “শুল্কের কারণে পণ্যের দাম বাড়বে, মুদ্রাস্ফীতি ত্বরান্বিত হবে এবং অর্থনীতি মন্দার দিকে ধাবিত হতে পারে।” ডিমোন আরও বলেন, “এই ধরনের নীতিমালার প্রভাবে বৈশ্বিকভাবে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বের প্রতি আস্থা ক্ষুণ্ন হতে পারে।”
অকম্যানের প্রশ্ন, “একটি অর্থনৈতিক পরমাণু যুদ্ধের মাঝখানে কোনো সিইও কি যুক্তরাষ্ট্রে দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগ করতে স্বস্তিবোধ করবেন?” তিনি যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান বাণিজ্যনীতিকে একটি “স্বনির্মিত দুর্যোগ” বলে অভিহিত করেন।
বিশ্লেষকদের মতে, ট্রাম্পের শুল্কনীতি মূলত জাতীয় উৎপাদন বৃদ্ধির কৌশল হলেও তা বৈশ্বিক বাণিজ্য ও আস্থায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। এ ধরনের পদক্ষেপ বিশ্বজুড়ে পুঁজিবাজারে অস্থিরতা সৃষ্টি করছে।
Leave a comment