দীর্ঘ ৩৩ বছরের অপেক্ষার পর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জাকসু) নির্বাচন শুরু হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) সকাল ৯টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ২১টি আবাসিক হলে ভোট গ্রহণ শুরু হয়, যা বিকেল ৫টা পর্যন্ত চলবে।
নির্বাচনের শুরু থেকেই মেয়েদের হলগুলোতে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় তুলনামূলক এগিয়ে রয়েছে ছাত্রশিবির ও বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ (বাগছাস)। দেখা যায়, শিক্ষার্থীরা উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট দিচ্ছেন। সকাল ৯টা থেকে ১২টার মধ্যে খালেদা জিয়া হলে ভোটার উপস্থিতি কম থাকলেও ধীরে ধীরে বাড়তে শুরু করেছে।
ছাত্রীরা জানান, দীর্ঘদিনের স্বপ্ন ছিল ছাত্রসংসদে ভোট দেওয়ার। শিক্ষার্থী রিপা আক্তার বলেন, “বন্ধু-বান্ধব সবাই আলোচনা করেছি, আমি স্বতন্ত্র প্রার্থীকে ভোট দিয়েছি। চাই ক্যাম্পাসে যারা কাজ করবে তারাই জিতুক।” অন্য শিক্ষার্থী মারিয়া আক্তার বলেন, “শিবিরকে ভোট দিয়েছি, কারণ তারা ক্যাম্পাসে স্থিতিশীল থাকে এবং মেয়েদের নিরাপত্তায় আস্থা দেওয়া যায়।”
জাকসুতে মোট ভোটার সংখ্যা ১১,৭৪৩ জন, এর মধ্যে ছাত্রী ৫,৭২৮ ও ছাত্র ৬,১১৫ জন। কেন্দ্রীয় সংসদের মোট ২৫টি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ১৭৭ জন প্রার্থী। এক সঙ্গে ২১টি হল সংসদ নির্বাচনেরও আয়োজন করা হচ্ছে।সহসভাপতি (ভিপি) পদে ৯ জন, সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে ৮ জন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক (নারী) পদে ৬ জন এবং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক (পুরুষ) পদে ১০ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। ২১টি হল সংসদে মোট ৩১৫টি পদে ৪৭৭ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
জাকসুতে মোট সাতটি প্যানেল প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। এর মধ্যে চারটি পূর্ণাঙ্গ প্যানেল—ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেল, ছাত্রশিবির সমর্থিত সমন্বিত শিক্ষার্থী জোট, প্রগতিশীল শিক্ষার্থীদের সম্প্রীতির ঐক্য ও গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ সমর্থিত শিক্ষার্থী ঐক্য ফোরাম। তিনটি আংশিক প্যানেল—স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী সম্মিলন, স্বতন্ত্র অঙ্গীকার পরিষদ ও ছাত্র ইউনিয়ন ও ছাত্র ফ্রন্টের সংশপ্তক পর্ষদ। এছাড়া অনেক স্বতন্ত্র প্রার্থীও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
খালেদা জিয়া হলের রিটার্নিং কর্মকর্তা প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আওলাদ হোসেন জানান, “হলে মোট ভোটার ৪০৯ জন, সকাল ১২টা পর্যন্ত ১২২ জন ভোট দিয়েছেন। আশা করা যায় বিকাল পর্যন্ত আরও ভোটার উপস্থিত থাকবেন।”
জাহানারা ইমাম হলের দায়িত্বপ্রাধ্যক্ষ প্রফেসর ড. মোঃ মাহবুবুর রহমান বলেন, “নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে চলছে, কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি। আমরা সচেতন আছি যাতে বিশৃঙ্খলা না ঘটে।”
Leave a comment