ভারতের কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল জম্মু-কাশ্মিরে ভয়াবহ ভূমিধসে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৩১ জনে দাঁড়িয়েছে। টানা ভারী বর্ষণের কারণে রিয়াসি জেলার কাটারা শহরের কাছে বিখ্যাত বৈষ্ণোদেবী মন্দিরের যাত্রাপথে এ দুর্ঘটনা ঘটে। এতে আহত হয়েছেন আরও অন্তত ২৩ জন পূণ্যার্থী, যাদের স্থানীয় হাসপাতালগুলোতে ভর্তি করা হয়েছে।
রিয়াসি জেলা পুলিশের প্রধান পরমবীর সিং বুধবার ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এএনআইকে মৃত ও আহতের সর্বশেষ সংখ্যা নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, ধ্বংসস্তূপের নিচে আরও মরদেহ চাপা পড়ে থাকতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
মঙ্গলবার দুপুরের দিকে টানা বৃষ্টির প্রভাবে মন্দিরগামী সড়কের পাশে অবস্থিত ইন্দ্রপ্রস্থ ভোজনালয় ও আশপাশের এলাকায় হঠাৎই ধস নামে। কাদা ও পাথরে পথ আটকে গেলে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে হাজারো পূণ্যার্থীর মধ্যে। দুর্ঘটনার পরপরই মন্দির কমিটির কর্মী ও নিরাপত্তা বাহিনী দ্রুত উদ্ধারকাজ শুরু করে।
পরে ভারতের জাতীয় দুর্যোগ মোকাবিলা বাহিনী (এনডিআরএফ) এবং আধাসামরিক বাহিনী সিআরপিএফ ঘটনাস্থলে যোগ দেয়। গত তিন দিন ধরে জম্মু-কাশ্মিরের রিয়াসি, জম্মু, সাম্বা, উধমপুর, ডোডা ও কিশ্তওয়াড়সহ বিস্তীর্ণ এলাকায় প্রবল বর্ষণ চলছে। বৃষ্টির কারণে শুধু ভূমিধস নয়, একাধিক জায়গায় হড়পা বানও দেখা দিয়েছে।
জেলা প্রশাসক পরমবীর সিং বলেন— “ভারী বৃষ্টির ফলে বহু এলাকায় সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। মোবাইল নেটওয়ার্কও আংশিকভাবে ধ্বংস হয়েছে। উদ্ধারকারী দলগুলোকে দুর্গম এলাকায় পাঠানো হলেও অবিরাম বর্ষণে কাজের গতি ব্যাহত হচ্ছে।”
তিনি আরও জানান, ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা থেকে এখন পর্যন্ত সাড়ে তিন হাজারেরও বেশি মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। ভারতের কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দপ্তর (আইএমডি) জানিয়েছে, আগামী দুই থেকে তিন দিন জম্মু-কাশ্মিরের আবহাওয়ায় তেমন উন্নতির সম্ভাবনা নেই। বরং আরও ভারী বৃষ্টির শঙ্কা রয়েছে। এ কারণে রিয়াসি, উধমপুর ও কিশ্তওয়াড়সহ অন্তত সাত জেলায় ভূমিধস ও হড়পা বান নিয়ে লাল সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
আইএমডি কর্মকর্তারা বলেছেন, পাহাড়ি অঞ্চলে যেকোনো সময় নতুন করে ধস নামতে পারে। তাই সাধারণ মানুষ ও পূণ্যার্থীদের নিরাপদ স্থানে অবস্থান করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। বৈষ্ণোদেবী মন্দিরে প্রতি বছর লাখো মানুষ দর্শনে আসেন। দুর্ঘটনার পর কর্তৃপক্ষ আনুষ্ঠানিকভাবে তীর্থযাত্রা স্থগিত করেছে। মন্দিরপথ ও আশপাশের এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।
Leave a comment