যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয়ে ছয় বছরের এক ফিলিস্তিনি-মার্কিন শিশুকে নির্মমভাবে হত্যা ও তার মাকে ছুরিকাঘাত করার দায়ে ৭৩ বছর বয়সী এক ব্যক্তিকে ৫৩ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন দেশটির আদালত। ২০২৩ সালের অক্টোবরে ঘটে যাওয়া এই মর্মান্তিক ঘটনায় দণ্ডিত ব্যক্তি জোসেফ জুবা ঘৃণা ও বিদ্বেষপ্রসূত হামলা চালিয়েছিলেন বলে রায়ে উল্লেখ করেছেন বিচারক।
জোসেফের হাতে খুন হওয়া শিশুটির নাম ওয়াদেয়া আল-ফাউমি। হত্যার মাত্র কয়েক দিন আগেই নিজের ষষ্ঠ জন্মদিন উদ্যাপন করেছিল সে। ওয়াদেয়ার মা হানান শাহিন ছিলেন জোসেফের বাড়ির ভাড়াটিয়া। গত বছরের ৭ অক্টোবর গাজায় হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর মাত্র এক সপ্তাহের মাথায় জোসেফ এই মুসলিম মা-ছেলের ওপর আক্রমণ চালান।
জানা গেছে, হানানের শয়নকক্ষে ঢুকে প্রথমে তাকে ছুরিকাঘাত করেন জোসেফ। হানান কোনোভাবে প্রাণ বাঁচিয়ে বাথরুমে আশ্রয় নিয়ে দরজা বন্ধ করে পুলিশকে ফোন দেন। এই ফাঁকে জোসেফ সামরিক মানের একটি ছুরি দিয়ে ছোট্ট ওয়াদেয়াকে ২৬ বার আঘাত করেন। ময়নাতদন্তে শিশুটির পেট থেকে ছুরির ৬ ইঞ্চি ফলা উদ্ধার করা হয়।
আদালতে জোসেফের সাবেক স্ত্রী মেরি জানান, গাজার যুদ্ধ নিয়ে ক্ষিপ্ত হয়ে জোসেফ এই মুসলিম পরিবারকে টার্গেট করেছিলেন। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরাও বলেন, এটি ছিল একটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, বিদ্বেষপ্রসূত হামলা।
বিচারক অ্যামি বার্টানি-টমজাক এই নির্মম হত্যাকাণ্ডকে যুক্তরাষ্ট্রের আইনে বিদ্বেষমূলক অপরাধ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে জোসেফকে তিনটি ধারায় সাজা দেন—শিশু হত্যায় ৩০ বছর, হানান শাহিনকে ছুরিকাঘাতে ২০ বছর এবং বিদ্বেষপ্রসূত অপরাধে আরও ৩ বছর। সাজাগুলো ধারাবাহিকভাবে কার্যকর হবে, অর্থাৎ তাকে অন্তত ৫৩ বছর কারাভোগ করতে হবে।
এই বর্বর ঘটনার পর তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এক বিবৃতিতে বলেন, “এটি ভয়ংকর ঘৃণার কাজ। আমেরিকার মাটিতে এর কোনো স্থান নেই।”
Leave a comment