চট্টগ্রামের পাহাড়তলী সাগরিকা রোড এলাকায় একটি লোহার ডিপোতে হাইড্রোলিক সিলিন্ডার বিস্ফোরণে অন্তত আটজন শ্রমিক গুরুতর দগ্ধ হয়েছেন। শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) বিকেল পাঁচটার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
দগ্ধরা হলেন—মো. আব্দুল কাদের, মো. আবুল কাসেম, মো. করিম, আব্দুল জলিল, আবুল বশর খান, জামাল হোসেন, মো. রাসেল ও মো. বাহার উদ্দিন। তাদের সবার শরীরের ৩০ থেকে ৮৫ শতাংশ পর্যন্ত পুড়ে গেছে বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন। বর্তমানে তারা চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (সিএমসিএইচ) বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগে চিকিৎসাধীন আছেন।
সিএমসিএইচ পুলিশ ফাঁড়ির উপ-পরিদর্শক মোহাম্মদ আশিকুর রহমান জানান, স্থানীয় একটি ডিপোতে শ্রমিকরা গ্যাস সিলিন্ডারের মাধ্যমে লোহার পাত কাটার কাজ করছিলেন। কাজ চলাকালীন হঠাৎ বিস্ফোরণ ঘটে। এতে শ্রমিকদের পাশাপাশি তাদের ঠিকাদারও দগ্ধ হন।
পুলিশ সূত্র জানায়, বিস্ফোরণটি জেএস এন্টারপ্রাইজ এবং এনএস ট্রেডার্স নামের দুটি লোহার ডিপোর ভেতরে ঘটে। বিস্ফোরণের শব্দে আশপাশে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে এবং স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যান।
হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, কয়েকজনের অবস্থা অত্যন্ত সঙ্কটজনক। তাদের শরীরের অধিকাংশ অংশ পুড়ে যাওয়ায় শ্বাসকষ্ট ও সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ছে। চিকিৎসক দলের তত্ত্বাবধানে সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।
পাহাড়তলী থানার কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে এবং কীভাবে সিলিন্ডার বিস্ফোরণ ঘটল, তা তদন্ত করা হবে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, গ্যাস সিলিন্ডারের লিকেজ বা অসতর্ক ব্যবহারের কারণে এ দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
শিল্প এলাকায় পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা না থাকায় এ ধরনের দুর্ঘটনা প্রায়ই ঘটে থাকে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন। তারা অভিযোগ করেন, অনেক ডিপোতে যথাযথ সুরক্ষা সরঞ্জাম ছাড়াই শ্রমিকদের দিয়ে ঝুঁকিপূর্ণ কাজ করানো হয়।
বাংলাদেশে সাম্প্রতিক সময়ে শিল্প এলাকায় সিলিন্ডার বিস্ফোরণ, বয়লার বিস্ফোরণ ও অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা বেড়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শ্রমিকদের সুরক্ষা নিশ্চিত না করে এবং অগ্নি ও বিস্ফোরণ নিরাপত্তা মান বজায় না রেখে শিল্পকারখানাগুলো পরিচালিত হওয়ায় বড় ধরনের ঝুঁকি থেকে যাচ্ছে।
Leave a comment