ইরানের শহীদ রাজয়ি বন্দরে ভয়াবহ বিস্ফোরণে অন্তত চারজন প্রাণ হারিয়েছেন এবং ৫১৬ জনের বেশি মানুষ আহত হয়েছেন। শুক্রবারের এই মর্মান্তিক ঘটনায় বন্দর আব্বাসের নিকটবর্তী গুরুত্বপূর্ণ বন্দরটি ভয়াবহ ক্ষতির মুখে পড়েছে। রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমের বরাত দিয়ে জানা যায়, বিস্ফোরণের সঠিক কারণ তাৎক্ষণিকভাবে জানা না গেলেও ধারণা করা হচ্ছে, বিপজ্জনক রাসায়নিক সংরক্ষণ ডিপোতে অগ্নিকাণ্ডের ফলেই এই দুর্ঘটনা ঘটেছে।
রাষ্ট্রীয় টিভিতে সম্প্রচারিত ফুটেজে বন্দরের আকাশে ঘন কালো ধোঁয়া উড়তে দেখা গেছে। প্রচণ্ড আগুন নেভাতে হেলিকপ্টার পর্যন্ত ব্যবহার করা হয়েছে। আহতদের দ্রুত নিকটবর্তী চিকিৎসাকেন্দ্রে স্থানান্তর করা হয়েছে। ইরানের রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির রিলিফ অ্যান্ড রেসকিউ অর্গানাইজেশনের প্রধান বাবাক মাহমুদি চারজনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
ঘটনার পরপরই ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসউদ পেজেশকিয়ান ক্ষতিগ্রস্তদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়েছেন এবং ঘটনার তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। একইসঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এসকান্দার মোমেনিকে ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছে।
শহীদ রাজয়ি বন্দর, যা তেহরান থেকে এক হাজার কিলোমিটারের বেশি দূরে অবস্থিত, ইরানের সর্ববৃহৎ এবং আধুনিক কনটেইনার বন্দর হিসেবে পরিচিত। এটি হরমুজ প্রণালির উত্তর প্রান্তে অবস্থিত, যেখান দিয়ে বিশ্বের প্রায় এক-পঞ্চমাংশ তেল পরিবাহিত হয়। বিস্ফোরণের তীব্রতা এতটাই ছিল যে ৫০ কিলোমিটার দূর থেকেও কম্পন অনুভূত হয়েছে বলে জানিয়েছে ফার্স বার্তা সংস্থা।
তাসনিম বার্তা সংস্থা আরও জানায়, বন্দরের বেশিরভাগ অবকাঠামো বিস্ফোরণে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে ইরানের রাষ্ট্রায়ত্ত তেল সরবরাহ সংস্থা নিশ্চিত করেছে যে বিস্ফোরণের সঙ্গে কোনো তেল পরিশোধনকেন্দ্র, বিতরণকেন্দ্র বা পাইপলাইনের কোনো সংযোগ নেই এবং এসব স্থাপনা স্বাভাবিকভাবেই পরিচালিত হচ্ছে।
উল্লেখ্য, ইরানে এ ধরনের বিস্ফোরণ অত্যন্ত বিরল হলেও, মাত্র কয়েক মাস আগে তাবাসের একটি কয়লাখনিতে গ্যাস লিকেজের কারণে ভয়াবহ দুর্ঘটনায় ৫০ জনের বেশি প্রাণ হারিয়েছিল। আজকের বিস্ফোরণের সময়, ওমানে ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিরা তেহরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছিলেন।
Leave a comment