আজ রোববার, শুভ বুদ্ধপূর্ণিমা। দিনটি বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের কাছে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ, কারণ এই পূর্ণিমাতেই ‘জগতের সকল প্রাণী সুখী হোক’ এই অহিংস বাণীর প্রচারক গৌতম বুদ্ধের শুভ জন্ম, বোধিলাভ এবং মহাপরিনির্বাণ সংঘটিত হয়েছিল। দেশের বৌদ্ধ সম্প্রদায় গভীর ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য ও আধ্যাত্মিক আবহে উদযাপন করে এই বুদ্ধপূর্ণিমা।
বুদ্ধপূর্ণিমা উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস পৃথক বাণী প্রদান করে , তারা বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করেছেন। এ ছাড়া বিভিন্ন সামাজিক, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতারা বৌদ্ধ সম্প্রদায়কে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন।
বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা বুদ্ধপূজা এবং শীল গ্রহণ, পিন্দান ও ভিক্ষু সংঘের প্রাতরাশসহ নানা আনুষ্ঠানিকতার মধ্য দিয়ে সারা দেশে দিনটি উদযাপন করবেন । সকাল থেকেই রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন বৌদ্ধ মন্দির ও বিহারে শুরু হবে প্রার্থনা, পূজা-অর্চনা এবং শান্তি কামনায় বিশেষ অনুষ্ঠান। বুদ্ধমূর্তির সামনে ফুল নিবেদন, প্রদীপ প্রজ্বালন এবং ধর্মীয় গ্রন্থ পাঠের মাধ্যমে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হবে। বুদ্ধপূর্ণিমা উপলক্ষে আজ দেশে সরকারি ছুটি।
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস শুভ বুদ্ধপূর্ণিমা উপলক্ষে দেওয়া বাণীতে বলেছেন, বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। হাজার বছর ধরে এ দেশে জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সব ধর্মের মানুষ একসঙ্গে মিলেমিশে বসবাস করে আসছে। ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে এ দেশ সব মানুষের নিরাপদ আবাসভূমি। মহামতি গৌতম বুদ্ধ হিংসা-বিদ্বেষ ও লোভ-লালসার ঊর্ধ্বে উঠে মানবজাতিকে আলোকিত করেছেন। মানুষের মধ্যে শান্তি ও কল্যাণ প্রতিষ্ঠায় গৌতম বুদ্ধ অহিংসার বাণী প্রচার করেছেন। গৌতম বুদ্ধের আদর্শ লালন করে দেশের বৌদ্ধ সম্প্রদায় বাংলাদেশকে একটি বৈষম্যহীন রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তুলতে কার্যকর ভূমিকা রাখবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
আজ সারাদেশের বৌদ্ধ বিহারগুলোতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বিশেষ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করছে।
‘শান্তি ও সহিষ্ণুতার প্রতীক হিসেবে বুদ্ধের শিক্ষা আজকের সমাজে বিশেষভাবে প্রাসঙ্গিক’ বলে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের লোকেরা জানান। বুদ্ধপূর্ণিমার এই মহিমান্বিত দিনে দেশের সকল নাগরিকের মধ্যে শান্তি ও সম্প্রীতির বার্তা পৌঁছে যাবে, এমনটাই প্রত্যাশা করেন তারা।
বুদ্ধের মূল জীবনদর্শন হচ্ছে অহিংসা, সাম্য, মৈত্রী ও প্রীতির বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে সহাবস্থান করা। অহিংসবাদের প্রবর্তক গৌতম বুদ্ধ বলেছিলেন, বৈরিতা দিয়ে বৈরিতা, হিংসা দিয়ে হিংসা কখনো প্রশমিত হয় না। অহিংসা দিয়ে হিংসাকে, অবৈরিতা দিয়ে বৈরিতাকে প্রশমিত করতে হবে।
Leave a comment