২০০৯ সালের ৯ মে রাজধানীর একটি হাসপাতালে শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেন দেশের বিশিষ্ট পরমাণুবিজ্ঞানী ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়া। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৬৭ বছর। তিনি দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন শারীরিক জটিলতায় ভুগছিলেন।
বিশ্ববরেণ্য এই বিজ্ঞানীর মৃত্যুতে দেশের বিজ্ঞান, শিক্ষা এবং রাজনৈতিক অঙ্গনে শোকের ছায়া নেমে আসে। তিনি শুধু একজন পরমাণু গবেষকই ছিলেন না, ছিলেন স্বাধীনতার পর বাংলাদেশে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির বিকাশে অন্যতম পথপ্রদর্শক।
১৯৪২ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলায় জন্মগ্রহণ করেন এম এ ওয়াজেদ মিয়া। উচ্চশিক্ষা লাভ করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং পরবর্তীতে যুক্তরাজ্যের ডারহাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি সম্পন্ন করেন পদার্থবিজ্ঞানে। কর্মজীবনে তিনি বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন। দেশজুড়ে পরমাণু গবেষণা, জ্বালানি উন্নয়ন এবং প্রযুক্তির শান্তিপূর্ণ ব্যবহারের বিষয়গুলোতে তাঁর অবদান অনস্বীকার্য।
তিনি ছিলেন শেখ হাসিনার স্বামী এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জামাতা। রাজনৈতিকভাবে উচ্চপর্যায়ের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট হলেও তিনি নিজেকে সবসময় একজন বিজ্ঞানী হিসেবেই পরিচয় দিতে ভালোবাসতেন।
তাঁর রচিত বই “বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে ঘিরে কিছু ঘটনা ও বাংলাদেশ” পাঠকমহলে ব্যাপকভাবে সমাদৃত হয়। বিজ্ঞান, রাজনীতি এবং জাতির ইতিহাসকে কেন্দ্র করে লেখা তাঁর বইগুলো আজো গবেষক এবং সাধারণ পাঠকের জন্য মূল্যবান দলিল হিসেবে বিবেচিত।
রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রীসহ দেশের বিশিষ্ট ব্যক্তিরা তাঁর মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেন এবং তাঁর অবদান শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন। রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় তাঁকে পীরগঞ্জে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।
ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়া ছিলেন একাধারে বিজ্ঞানী, লেখক ও নীতিবান মানুষ, যাঁর ব্যক্তিত্ব আজও দেশের বিজ্ঞানচর্চা ও নীতিনিষ্ঠ নেতৃত্বের জন্য অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করছে।
Leave a comment