১৯৮৪ সালের ৯ মে বিশ্বের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ মাউন্ট এভারেস্টের চূড়ায় পৌঁছে ইতিহাস গড়লেন চীনের পর্বতারোহী ফু দোর্ (Phu Dorji)। যা এই অভিযানের সবচেয়ে চমকপ্রদ দিক, তা হলো—তিনি সম্পূর্ণরূপে অক্সিজেন সিলিন্ডার ছাড়াই এভারেস্ট জয় করেন, যা তখনকার সময়ে ছিল অভূতপূর্ব এক কৃতিত্ব।
মাউন্ট এভারেস্ট, যা সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৮,৮৪৮ মিটার (২৯,০২৯ ফুট) উচ্চতায় অবস্থিত, দীর্ঘদিন ধরেই বিশ্বের সবচেয়ে কঠিন এবং প্রাণঘাতী অভিযানের প্রতীক। অতীতে যারা এই পর্বত জয় করেছেন, তাদের প্রায় সবাই উচ্চতাজনিত শ্বাসকষ্ট মোকাবেলায় অক্সিজেন সিলিন্ডার ব্যবহার করেছেন। কিন্তু ফু দোর্ এই প্রচলিত নির্ভরতা থেকে সরে এসে নিজের দেহ ও মনকে সম্পূর্ণভাবে উচ্চতার চ্যালেঞ্জের সঙ্গে মানিয়ে নেন।
এই অনন্য সাফল্য অর্জনের মাধ্যমে তিনি শুধু নিজ দেশের নয়, পুরো বিশ্বের পর্বতারোহণ ইতিহাসে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেন। তাঁর সাহসিকতা ও শারীরিক সক্ষমতা বিশ্বজুড়ে প্রশংসিত হয়। বিশেষ করে যে সময়ে আধুনিক পর্বতারোহণ সরঞ্জামও তেমন উন্নত ছিল না, সে সময় অক্সিজেন ছাড়াই এমন একটি মিশন সম্পন্ন করা ছিল জীবননাশের ঝুঁকি নেওয়ার শামিল।
চীনের জাতীয় পর্বতারোহণ সংস্থা জানায়, ফু দোর্-কে এই অভিযানের আগে বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছিল যাতে তার শরীর স্বাভাবিকভাবেই উচ্চতাজনিত চাপে মানিয়ে নিতে পারে। তার মানসিক দৃঢ়তা, প্রশিক্ষণ, এবং শারীরিক সক্ষমতার কারণে এই দুঃসাহসিক কৃতিত্ব সম্ভব হয়েছে।
পর্বতারোহণ ইতিহাসে ফু দোর্-র এই সাফল্য শুধুই রেকর্ড ভাঙা একটি অর্জন নয়; এটি পর্বতারোহীদের জন্য এক অসাধারণ অনুপ্রেরণা—যা দেখায় যে আত্মবিশ্বাস, দৃঢ়তা ও শারীরিক প্রস্তুতি থাকলে অসম্ভবকেও সম্ভব করা যায়।
এই ঘটনা পরবর্তী প্রজন্মের পর্বতারোহীদের জন্য সাহস ও সীমাহীন সম্ভাবনার নতুন দৃষ্টান্ত হয়ে রইল।
Leave a comment