মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া উপজেলায় গলায় ফাঁস দিয়ে তিন সন্তানের জননী আত্মহত্যা করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। পরিবারের দাবি, বিভিন্ন এনজিও থেকে নেওয়া প্রায় তিন লাখ টাকার ঋণের কিস্তি পরিশোধ করতে না পারায় দীর্ঘদিনের মানসিক চাপ থেকেই তিনি আত্মহত্যার পথ বেছে নিতে পারেন।
সোমবার সকাল ৭টার দিকে উপজেলার পুরান বাউশিয়া গ্রামের একটি ভাড়া বাসা থেকে তার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। নিহত গৃহবধূর নাম জিলহজ আক্তার (২৮)। তিনি কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার বাসিন্দা কামরুল হাসানের স্ত্রী।
পারিবারিক ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, কামরুল হাসান দীর্ঘ সাত থেকে আট বছর ধরে গজারিয়ায় একটি খাবার হোটেলে বাবুর্চি হিসেবে কাজ করে আসছেন। জীবিকার তাগিদে তিনি একাই গজারিয়ায় অবস্থান করতেন। প্রায় এক সপ্তাহ আগে স্ত্রী জিলহজ আক্তার তাদের দুই মেয়ে ও এক ছেলেকে নিয়ে কুমিল্লা থেকে স্বামীর কাছে চলে আসেন।
নিহতের স্বামী কামরুল হাসান জানান, সংসার চালাতে গিয়ে তার স্ত্রী বিভিন্ন এনজিও থেকে ধাপে ধাপে প্রায় তিন লাখ টাকা ঋণ নেন। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে কিস্তির চাপ বাড়তে থাকে। নিয়মিত এনজিও কর্মীরা বাড়িতে এসে কিস্তির জন্য চাপ সৃষ্টি করায় পরিবারটি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে।
তিনি বলেন, “কিস্তির টাকার জন্য প্রতিদিন লোকজন বাড়িতে আসত। মানসিক চাপে আমরা কুমিল্লা ছেড়ে গজারিয়ায় চলে আসি। ভেবেছিলাম নতুন জায়গায় থাকলে হয়তো চাপ কমবে।”
স্বামীর ভাষ্যমতে, রোববার রাতে পরিবারের সবাই একসঙ্গে রাতের খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে পড়েন। সোমবার ভোরে ঘুম থেকে উঠে তিনি দেখতে পান, তার স্ত্রী সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে ঝুলে আছেন। দ্রুত ওড়না কেটে মরদেহ নিচে নামানো হয়। পরে জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯-এ ফোন করলে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে লাশ উদ্ধার করে।
এ বিষয়ে গজারিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হাসান আলী বলেন, “খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করেছে। প্রাথমিকভাবে এটি আত্মহত্যার ঘটনা বলে ধারণা করা হচ্ছে। এ ঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।”
তিনি আরও জানান, ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন ও পারিবারিক বক্তব্য যাচাই করে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ নিশ্চিত করা হবে।
Leave a comment