মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলায় শারফিন মোল্লা হত্যা মামলার প্রধান আসামি রউফুল আলম মুন্সীকে ঢাকার মিরপুর এলাকা থেকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সোমবার (১ ডিসেম্বর) গভীর রাতে তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় একটি বিশেষ অভিযান চালিয়ে তাকে শাহ আলী মাজার রোড থেকে আটক করা হয়। গ্রেফতারের পর মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) দুপুরে তাকে পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদনসহ আদালতে উপস্থাপন করা হয়েছে।
পুলিশ জানায়, রউফুল আলম মুন্সী সিংগাইরের ফোর্ডনগর মোল্লা পাড়া এলাকার মৃত আব্দুর রাজ্জাক মুন্সীর ছেলে। শারফিন মোল্লা হত্যাকাণ্ডের পর থেকে তিনি পলাতক ছিলেন এবং রাজধানীতে লুকিয়ে ছিলেন বলে ধারণা পাওয়া যায়। দীর্ঘ ট্র্যাকিং ও গোয়েন্দা নজরদারির পর তাকে শনাক্ত করে গ্রেফতার সম্ভব হয়েছে বলে জানায় তদন্তকারীরা।
গত ২২ নভেম্বর (শনিবার) সন্ধ্যার পর সিংগাইরের ধল্লা ইউনিয়নের চর উলাইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পূর্ব পাশে কুরবান আলীর বাড়ির সামনে এই হত্যাকাণ্ড ঘটে। জমি নিয়ে দীর্ঘদিনের বিরোধের জেরে শারফিন মোল্লা (৬০)-কে কয়েকজন দুর্বৃত্ত এলোপাতাড়ি কুপিয়ে গুরুতর আহত করে।
স্থানীয়রা জানান, আঘাতের মাত্রা ছিল গুরুতর। ঘটনাস্থলেই তিনি রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে ছিলেন। পরে তাকে উদ্ধার করে সাভারের একটি বেসরকারি হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
পরদিন ২৩ নভেম্বর নিহতের ছেলে মোশারফ হোসেন বাদী হয়ে সিংগাইর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় ১৩ জনের নাম উল্লেখ করা হয় এবং আরও ৩ থেকে ৪ জন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিকে আসামি করা হয়। শুরু থেকেই মামলাটিকে “অতি গুরুত্বপূর্ণ” হিসেবে বিবেচনা করে পুলিশ বিশেষ নজরদারি চালায়।মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই রেজাউল করিমের নেতৃত্বে এসআই পার্থ শেখর ঘোষ এবং এএসআই আব্দুল জলিলসহ একটি বিশেষ টিম গঠন করা হয়। ঘটনার দিনই এজাহারভুক্ত এক আসামিসহ দুই ব্যক্তিকে আটক করা হয়।
সিংগাইর থানার ওসি জে.ও.এম তৌফিক আজম জানান, রউফুলকে গ্রেফতারের জন্য একাধিক প্রযুক্তিগত পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়। মোবাইল নম্বর বদলানো, অবস্থান পরিবর্তনসহ বিভিন্ন কৌশল গ্রহণ করে তিনি নিজেকে আড়াল করার চেষ্টা করলেও শেষ পর্যন্ত পুলিশের গোয়েন্দা নজরদারি থেকে পালাতে পারেননি। তিনি বলেন,“মামলার প্রধান আসামি রউফুলকে গ্রেফতারের মাধ্যমে তদন্তে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি এসেছে। বাকি আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।”
Leave a comment