দেশজুড়ে ধীরে ধীরে বাড়ছে শীতের আমেজ । নভেম্বরের শেষ ভাগে এসে দেশের অধিকাংশ এলাকায় ভোরে ঠান্ডা হাওয়া ও হালকা কুয়াশা শীতের আগমনী বার্তা দিচ্ছে। রাজধানী ঢাকায়ও সেই আমেজ দেখা যাচ্ছে—আজ সোমবার (২৪ নভেম্বর) সকাল ৬টায় তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১৯.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা মৌসুমের তুলনায় স্বস্তিদায়ক এবং শীতের সূচনা নির্দেশ করে।
ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী অঞ্চলের জন্য সকাল ৭টা থেকে পরবর্তী ৬ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে এসব তথ্য জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
আজ ভোরে দেশের কিছু অঞ্চলে হালকা কুয়াশা দেখা গেছে। বিশেষ করে নদী তীরবর্তী ও নিম্নাঞ্চলগুলোতে কুয়াশার প্রভাব বেশি ছিল। যদিও দিনের আলো বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কুয়াশার মাত্রা দ্রুত কেটে যায়। রাজধানীতেও ভোরের বাতাস ছিল স্বস্তিদায়ক, আর্দ্রতা কিছুটা বেশি হলেও তাপমাত্রা কমে যাওয়ায় শীতল অনুভূতি তৈরি হয়েছে।
পূর্বাভাস অনুযায়ী, আজ সোমবার ঢাকা ও এর আশপাশের এলাকায় আকাশ অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা থাকতে পারে, তবে সার্বিক আবহাওয়া শুষ্কই থাকবে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, দিনের প্রথমার্ধে উত্তর বা উত্তর–পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৬ থেকে ১২ কিলোমিটার বেগে বাতাস প্রবাহিত হতে পারে। উত্তরবঙ্গের হিমেল হাওয়া দক্ষিণমুখে প্রবাহিত হওয়ায় শীতের অনুভূতি বাড়ছে বলে আবহাওয়াবিদরা জানান ।
পূর্বাভাসে দেওয়া তথ্য অনুযায়ী তাপমাত্রার সর্বশেষ অবস্থা—
• ঢাকার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা (সকাল ৬টায়): ১৯.১ ডিগ্রি সেলসিয়াস
• সকাল ৬টায় রেকর্ড তাপমাত্রা: ১৯.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস
• গতকালের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা: ২৯.১ ডিগ্রি সেলসিয়াস
• বাতাসের আপেক্ষিক আর্দ্রতা: ৭৯ শতাংশ
গত ২৪ ঘণ্টায় ঢাকায় কোনো বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়নি। ফলে আবহাওয়া পুরোপুরি শুষ্ক রয়েছে, যা শীতের আগমনী বার্তার সঙ্গে স্বাভাবিকভাবে সামঞ্জস্যপূর্ণ।
আবহাওয়াবিদদের মতে, উত্তরাঞ্চলে ইতোমধ্যে তাপমাত্রা ১৫–১৬ ডিগ্রির নিচে নামতে শুরু করেছে। ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে এসব এলাকায় শীত উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়বে। রাজশাহী, রংপুর, নীলফামারী, পঞ্চগড়সহ উত্তরাঞ্চলে হালকা শীতপ্রবাহ শুরু হওয়ার সম্ভাবনাও রয়েছে। এছাড়া রাজধানী ঢাকায় ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহেই তাপমাত্রা ১৬–১৮ ডিগ্রিতে নামতে পারে, যা শহুরে শীতের স্পষ্ট ইঙ্গিত।
ডাক্তাররা বলছেন, তাপমাত্রা কমা শুরু হলে শিশু ও বয়স্কদের বিশেষ যত্ন নেওয়া জরুরি। সকালের কুয়াশা ও ধুলাবালির কারণে সর্দি-কাশি, নিউমোনিয়া ও হাঁপানি বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে।
বিশেষজ্ঞদের কিছু পরামর্শ—
• সকালে বাইরে বের হলে গরম কাপড় ব্যবহার
• হালকা ব্যায়াম ও শরীর গরম রাখা
• শিশু, বয়স্ক ও রোগীদের ঠান্ডা পরিবেশে থাকতে না দেওয়া
• কুয়াশার সকালে গাড়ি চালানোর সময় সতর্ক থাকা
একদিকে কৃষকদের জন্য শীতকাল ফসল কাটার মৌসুম, অন্যদিকে শহরবাসীর জন্য আরামদায়ক সকাল। ঠান্ডার মিষ্টি ছোঁয়ায় বদলে যাচ্ছে পরিবেশ—সব মিলিয়ে শীতের আগমনকে স্বাগত জানাচ্ছে দেশবাসী।
Leave a comment