বগুড়ায় আফিয়া আক্তার (১৯) নামের এক নববধূকে শ্বাসরোধে হত্যার অভিযোগে তার স্বামী রিয়াজুল নাফিসকে (২২) আটক করেছে পুলিশ। রোববার (২৩ নভেম্বর) সন্ধ্যায় শহরের কৈপাড়া এলাকায় একটি ভাড়া বাসা থেকে আফিয়ার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বগুড়া সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাসান বাসির।
পরিবারের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, তিন মাস আগে দুই পরিবারের অমতে বিয়ে করেন কাহালু উপজেলার মুরইল গ্রামের আফিয়া আক্তার ও নশিপুর গ্রামের রিয়াজুল নাফিস। বিয়ে মেনে নিতে না চাওয়ায় তারা বগুড়া শহরের কৈপাড়া এলাকার একটি বহুতল ভবনের নিচতলায় ভাড়া বাসায় থাকতেন।
কিন্তু স্বজনদের অভিযোগ, বিয়ের সম্পর্ক মেনে নিতে সম্প্রতি নাফিসের পরিবার আফিয়ার পরিবারের কাছে যৌতুক হিসেবে পাঁচ লাখ টাকা ও একটি মোটরসাইকেল দাবি করে। এ নিয়ে দাম্পত্য জীবনে নিয়মিত কলহ চলছিল।
গত বৃহস্পতিবার যৌতুকের দাবির বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করতে আফিয়া নিজ বাড়িতে ফিরে যান। সবকিছু মিটমাট করে রোববার দুপুরে তিনি আবার বগুড়া শহরের ভাড়া বাসায় ফেরত আসেন। কিন্তু এর কিছু ঘণ্টা পরেই পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নেয়।
বিকেলে আফিয়া একাধিকবার বাবা-মাকে ফোন করে জানান, “আমাকে বাঁচাও।” তার এই মরিয়া অনুরোধ পেয়ে পরিবার দ্রুত কৈপাড়ার বাসায় ছুটে যান। সেখানে গিয়ে তারা দেখতে পান—ঘরের জানালার গ্রিলের সঙ্গে ওড়না পেঁচানো অবস্থায় ঝুলে আছে আফিয়ার নিথর দেহ।
স্বজনরা জানান, তাদের উপস্থিতি টের পেয়ে নাফিস পালানোর চেষ্টা করছিলেন। তবে স্থানীয়রা তাকে ধরে ফেলেন । খবর পেয়ে অতিরিক্ত পুলিশ গিয়ে রাত ১১টার দিকে নাফিসকে থানায় নিয়ে যায়।
আফিয়ার পরিবার স্পষ্ট অভিযোগ করেছে—যৌতুকের টাকা দিতে না পারায় নাফিস তাকে নির্যাতনের পর শ্বাসরোধে হত্যা করেছে। ওসি হাসান বাসির জানান,“অভিযুক্ত নাফিসকে আটক করে হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। প্রতিবেদন না পাওয়া পর্যন্ত নিশ্চিতভাবে বলা যাচ্ছে না এটি হত্যা নাকি আত্মহত্যা। অভিযোগের ভিত্তিতে আইনানুগ পদক্ষেপ নেওয়া হবে।”
Leave a comment