অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস জানিয়েছেন, আগামী ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে অবাধ, সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য এবং উৎসবমুখর নির্বাচন আয়োজনের জন্য তার সরকার অঙ্গীকারবদ্ধ। তবে আওয়ামী লীগ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবে না। কারণ, দলের কার্যক্রম বর্তমানে নিষিদ্ধ এবং তাদের নিবন্ধন নির্বাচন কমিশনের নির্দেশে স্থগিত রয়েছে।
মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) রাজধানীর রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় নেদারল্যান্ডসের আন্তর্জাতিক সহযোগিতাবিষয়ক উপমন্ত্রী প্যাসকেল গ্রোটেনহুইসের সঙ্গে বৈঠকে অধ্যাপক ইউনূস এ কথা বলেন ।সাক্ষাৎকালে দুই নেতা কৃষি, বাণিজ্য, প্রযুক্তি, যুব উন্নয়ন, তরুণ ও নারী উদ্যোক্তাদের জন্য সামাজিক ব্যবসা তহবিল গঠনের সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করেন। এছাড়া বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণ ও নির্বাচন প্রক্রিয়া সম্পর্কেও মতবিনিময় করেন। প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, আসন্ন নির্বাচনে রেকর্ডসংখ্যক তরুণ ভোটার প্রথমবার ভোট দিতে আসবেন। “এই তরুণরা অতীত স্বৈরাচারী সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত তিনটি কারচুপিপূর্ণ নির্বাচনে ভোট দিতে পারেননি। তারা এখন ভোটকেন্দ্রে আসবে, যা বাংলাদেশের গণতন্ত্রের জন্য একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত।”
তিনি আরও উল্লেখ করেন, শহরের দেয়ালে গ্রাফিতি ও আন্দোলনের মাধ্যমে অংশ নেওয়া তরুণরা এবার ভোটের মাধ্যমে দেশের ভবিষ্যত গড়তে অংশ নেবেন। ডাচ উপমন্ত্রী প্যাসকেল গ্রোটেনহুইস বাংলাদেশের নির্বাচন প্রস্তুতির প্রশংসা করে বলেন, “মাত্র কয়েক মাস সময় থাকা সত্ত্বেও অন্তর্বর্তী সরকার চমৎকার প্রস্তুতি নিয়েছে।”
তিনি বাংলাদেশের সদ্য প্রণীত শ্রম আইনকেও সাধুবাদ জানান এবং বলেন, এই সংস্কারগুলো নেদারল্যান্ডসসহ ইউরোপের আরও বেশি বিনিয়োগ আকর্ষণে সহায়ক হবে। নেদারল্যান্ডস বাংলাদেশের বিনিয়োগ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ (পিপিপি) বিষয়ক সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষর করতে যাচ্ছে, যা দ্রুত বাস্তবায়িত হবে বলে আশা প্রকাশ করেন।
প্যাসকেল আরও বলেন, “গত ৫০ বছর ধরে বাংলাদেশ ও নেদারল্যান্ডস উন্নয়ন সহযোগী ছিল। এখন আমরা এই সম্পর্ককে রাজনীতি, বাণিজ্য ও বিনিয়োগে একটি সমতাপূর্ণ অংশীদারত্বে রূপান্তরিত করতে চাই। ডাচ উপমন্ত্রী আরও বলেন, এতদিন যেসব ডাচ কোম্পানি বাংলাদেশ থেকে পণ্য সংগ্রহ করতো, তারা এখন বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে ও কার্যকর অংশীদার হতে আগ্রহী।
Leave a comment