রংপুরের কাঁচামাল ব্যবসায়ী আশরাফুল হককে হত্যা করে ২৬ খণ্ডে বিভক্ত করার মর্মান্তিক ঘটনার দায় স্বীকার করেছেন তার বন্ধু জরেজুল ইসলাম জরেজ এবং জরেজের পরকীয়া প্রেমিকা শামীমা আক্তার। মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) পাঁচ দিনের রিমান্ড শেষে দু’জনকেই ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করে পুলিশ। তারা স্বেচ্ছায় জবানবন্দি দিতে সম্মত হওয়ায় তদন্ত কর্মকর্তা তা রেকর্ড করার আবেদন করেন।
পরে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আবদুল ওয়াহাব আসামি জরেজের এবং ম্যাজিস্ট্রেট মাসুম মিয়া আসামি শামীমার জবানবন্দি রেকর্ড করেন। আদালত জবানবন্দি শেষে তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। এর আগে ১৪ নভেম্বর কুমিল্লার দাউদকান্দি থেকে জরেজকে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) গ্রেপ্তার করে। আর শামীমাকে গ্রেপ্তার করে র্যাব-৩। ১৫ নভেম্বর আদালত দুইজনের পাঁচ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
১১ থেকে ১৩ নভেম্বরের মধ্যে প্রাণঘাতী এই ঘটনাটি ঘটে। মালয়েশিয়া থেকে ফেরার পর বন্ধুর ডাকেই ঢাকায় আসেন আশরাফুল হক। তদন্তে জানা যায়, জরেজসহ অজ্ঞাতপরিচয় কয়েকজন পরিকল্পিতভাবে ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাকে হত্যা করে। এরপর লাশ টুকরো করে ২৬ খণ্ডে বিভক্ত করা হয়। ১৩ নভেম্বর সন্ধ্যায় হাইকোর্ট-সংলগ্ন জাতীয় ঈদগাহ মাঠের গেটের পাশে একটি ড্রাম থেকে ওই খণ্ডিত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ১৪ নভেম্বর নিহতের বোন আনজিরা বেগম শাহবাগ থানায় মামলা করেন। মামলায় জরেজসহ কয়েকজন অজ্ঞাত ব্যক্তিকে আসামি করা হয়।
প্রাথমিক জবানবন্দিতে শামীমা র্যাবকে জানান, আশরাফুলকে ‘হানি ট্র্যাপ’-এ ফেলে ব্ল্যাকমেইল করে ১০ লাখ টাকা আদায়ের পরিকল্পনার অংশ হিসেবেই ঢাকায় ডেকে আনা হয়। এই পরিকল্পনার মূল নায়ক ছিলেন তার ঘনিষ্ঠ বন্ধু জরেজ। পরিকল্পনা ব্যর্থ হওয়ার পরই নৃশংস হত্যাকাণ্ডটি ঘটানো হয় বলে ধারণা করছে তদন্তকারী সংস্থা। নির্মম এই হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের জবানবন্দি রেকর্ড হওয়ায় তদন্ত আরেক ধাপ এগিয়েছে। তদন্ত শেষে ঘটনার পূর্ণ বিবরণ আদালতে উপস্থাপন করা হবে।
Leave a comment