রাজধানীর মিরপুরের শিয়ালবাড়িতে একটি পোশাক কারখানা ও রাসায়নিক গুদামে আগুনের ঘটনায় ১১ দিন পর নতুন করে একজন নারীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। রোববার রাতে উদ্ধারকৃত মরদেহের পরিচয় নিশ্চিত করা হয়েছে। নিহত নারীর নাম মার্জিয়া সুলতানা। এ নিয়ে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১৭ জনে দাঁড়িয়েছে।
নিহত মার্জিয়া সুলতানা সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা উপজেলার গোল্লা রাজাপুর গ্রামের মো. সুলতান মিয়ার মেয়ে। তিনি শিয়ালবাড়ির ১২ নম্বর রোডের মজিবুরের বস্তিতে পরিবারের সঙ্গে বসবাস করতেন। মার্জিয়ার বাবা মো. সুলতান মিয়া জানিয়েছেন, তার মেয়ে স্বামী জয় মিয়ার সঙ্গে একই পোশাক কারখানায় কাজ করতেন। আগুনের ঘটনায় স্বামী জয়ের মরদেহ উদ্ধার হলেও মার্জিয়া নিখোঁজ ছিলেন।
মার্জিয়ার বাবা বলেন, “আমাদের বিশ্বাস ছিল মরদেহ ঐ ভবনেই আছে। বারবার খোঁজার চেষ্টা করেও পায়নি। রোববার বিকেলে পুলিশ আমাদের সঙ্গে নিয়ে ভবনে খুঁজতে গিয়ে তৃতীয় তলায় মেশিনের নিচে চাপা মরদেহটি পাই। পরনের বোরকা দেখে বুঝতে পারি—এটি আমার মেয়ের লাশ।” ডিএমপির রূপনগর থানার এসআই আবদুল্লাহ আল রাব্বি জানান, উদ্ধার হওয়া মরদেহ ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠানো হয়েছে। তবে এ পর্যন্ত বিস্তারিত তথ্য জানা যায়নি।
১৪ অক্টোবর শিয়ালবাড়ির ৩ নম্বর রোডে অবস্থিত আলম ট্রেডার্স নামের রাসায়নিক গুদামে আগুন লেগে তা বিস্ফোরিত হয়ে বিপরীত পাশে থাকা চারতলা ভবনে ছড়িয়ে পড়ে। ভবনের দোতলায় স্মার্ট প্রিন্টিং নামে একটি টি-শার্ট প্রিন্টিং কারখানা, আর তিন ও চারতলায় আর এন ফ্যাশন নামে একটি পোশাক কারখানা ছিল।
প্রাথমিক উদ্ধার অভিযানে দোতলা ও তৃতীয় তলার বিভিন্ন স্থান থেকে মোট ১৬টি মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছিল। তবে তৃতীয় তলায় মেশিনের নিচে চাপা থাকা মরদেহটি উদ্ধার করা হয়নি, যা ১১ দিন পর বের করা হলো।
এই দুর্ঘটনা দেশে পোশাক শিল্প ও রাসায়নিক ব্যবস্থাপনার নিরাপত্তার বিষয়ে নতুন করে সতর্কবার্তা দিয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভবনের অগ্নি নিরাপত্তা ব্যবস্থা, জরুরি প্রস্থান পথ এবং রাসায়নিকের সঠিক সংরক্ষণ নিশ্চিত করা না হলে এমন ঘটনা পুনরায় ঘটার সম্ভাবনা রয়েছে।
Leave a comment