পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলায় ঘুমন্ত অবস্থায় সাপের কামড়ে অটোরিকশা চালক হারান আলী (৫০) মারা গেছেন। বুধবার (২৪ সেপ্টেম্বর) রাত ১টার দিকে পতিরাজপুর গ্রামে তার নিজ বাড়িতে এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে। বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) সকাল ৯টার দিকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। হারান আলী আজগর আলীর ছেলে এবং মুলাডুলি ইউনিয়নের বাসিন্দা।
স্থানীয় সূত্র জানায়, রাতে ঘুমের সময় হঠাৎ একটি বিষধর সাপ হারান আলীর ওপর হামলা চালায়। পরিবারের সদস্যরা বিষয়টি লক্ষ্য করার পর স্থানীয় এক ওঝার কাছে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যান। রাতভর ঝাড়ফুঁক চললেও তার শারীরিক অবস্থা আরও অবনতির দিকে যায়। শেষ পর্যন্ত সকালে হাসপাতালে নেয়ার সময় তার মৃত্যু হয়।
নিহতের প্রতিবেশী আব্দুস সালাম জানিয়েছেন, মাত্র এক সপ্তাহ আগে একই এলাকায় সিগ্ধা খাতুন (১৮) নামের এক গৃহবধূও সাপের কামড়ে মারা গিয়েছিলেন। তাকে প্রথমে ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলেও সেখানে এক ঘণ্টার বেশি সময় ধরে এন্টিভেনম প্রয়োগ করা হয়নি। পরে রাজশাহী মেডিকেল কলেজে নেয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। উল্লেখ্য, সিগ্ধা খাতুন হারান আলীর আপন শ্যালকের পুত্রবধূ ছিলেন।
এই অভিজ্ঞতার কারণে হারান আলীর পরিবার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে না গিয়ে স্থানীয় ওঝার কাছে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।
ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আলী এহসান বলেন, “আমাদের হাসপাতালে এন্টিভেনম রয়েছে। তবে প্রয়োগের আগে রোগীকে কিছু সময় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়। কিন্তু অনেক সময় স্বজনরা সেই সময় অপেক্ষা করতে চান না এবং দ্রুত চিকিৎসার জন্য অন্য ব্যবস্থা নেয়।”
বাংলাদেশে সাপের কামড়ের কারণে প্রতিদিনই মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সাপের কামড়ের পর দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া এবং যথাযথ এন্টিভেনম প্রয়োগই জীবন রক্ষা করতে পারে। ঘরে বা খোলা মাঠে ঘুমের সময় সতর্কতা না নেওয়া এবং স্থানীয় ওঝার মতো অপ্রমাণিত চিকিৎসায় নির্ভর করা মারাত্মক বিপদ তৈরি করে।
Leave a comment