ভারতের সংগীতাঙ্গনের আলোচিত মুখ জুবিন গার্গ’র অকালপ্রয়াণ গোটা দেশকে শোকস্তব্ধ করেছেন। ২৩ সেপ্টেম্বর, মঙ্গলবার গুয়াহাটিতে তার শেষকৃত্যে অংশ নিয়েছিলেন প্রায় ১৭ লাখ মানুষ, যা ভারতের কোনো তারকার শেষকৃত্যে সর্বোচ্চ বলে জানিয়েছে লিমকা বুকস অফ রেকর্ডস। এই বিশাল ভিড়ের তুলনা মাইকেল জ্যাকসন, পোপ ফ্রান্সিস এবং রানি এলিজাবেথের শেষকৃত্যের সাথে করা হয়েছে।
জুবিনের মরদেহ ২০ সেপ্টেম্বর আসামে পৌঁছার পরই রাস্তায় মানুষের ঢল নামে। শেষবারের মতো তাকে দেখার জন্য রোববার থেকেই রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে অনুরাগীরা ভিড় জমাতে শুরু করেন। শেষকৃত্যকালে পুরো গুয়াহাটির রাস্তাগুলো যান চলাচলের জন্য বন্ধ রাখা হয় এবং কার্যত তিনদিন শহরের জীবন অচল হয়ে পড়ে। স্তব্ধ জনজীবন, চোখে জল আর কণ্ঠে প্রার্থনার মধ্য দিয়ে তার ভক্তরা প্রিয় শিল্পীকে বিদায় জানান।
জুবিনের ব্যক্তিগত জীবন ছিল সীমিত। স্ত্রী গারিমা তার ছায়াসঙ্গী ছিলেন। কোনো সন্তান না থাকায় শেষকৃত্যে ছোট বোন পামী বড়ঠাকুর নিজ হাতে মুখাগ্নি করেন। প্রিয় গায়ককে স্মৃতির পাতায় জীবন্ত রাখার জন্য শিল্পী দিগন্ত ভারতী তার পায়ের ছাপ সংগ্রহ করেন, আর ভক্তরা তার কাহিলপাড়ার বাড়ির সামনে জড়ো হয়ে শ্রদ্ধা জানান।
উল্লেখ্য, ২০ ও ২১ সেপ্টেম্বর সিঙ্গাপুরের নর্থ-ইস্ট ফেস্টিভ্যালে পারফর্ম করার কথা ছিল জুবিনের। তবে ১৯ তারিখেই চিরতরে থেমে যায় সেই সুরের সফর । জানা গেছে, তিনি দীর্ঘদিন ধরে মৃগী রোগে ভুগছিলেন এবং স্কুবা ডাইভিংয়ের সময় ওই সমস্যা প্রকট হয়, যার কারণে দুর্ঘটনা ঘটে। স্থানীয় প্রশাসন মৃত্যুর প্রকৃত কারণ অনুসন্ধান করছে।
জুবিন গার্গের অকাল প্রয়াণে আসাম তথা ভারতের সংগীতপ্রেমী মানুষদের মধ্যে শোকের ছায়া নেমেছে। শেষকৃত্যের ইতিহাস গড়ে দিয়ে তিনি প্রমাণ করলেন, তিনি ছিলেন নিঃসন্দেহে ‘জনতার গায়ক’।



Leave a comment