চীন সম্প্রতি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সমাপ্তি উপলক্ষে আয়োজিত সামরিক কুচকাওয়াজে যুদ্ধজাহাজ–বিধ্বংসী হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রদর্শন করেছে। বিশ্লেষকদের মতে, এটি যুক্তরাষ্ট্রকে একটি সরাসরি সতর্কবার্তা বহন করছে। কারণ সংঘাত দেখা দিলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিমানবাহী রণতরি ঝুঁকির মুখে পড়তে পারে।
চীন ও রাশিয়া দীর্ঘদিন ধরে হাইপারসনিক অস্ত্র প্রযুক্তিতে বিনিয়োগ করে আসছে। শব্দের চেয়ে পাঁচ গুণ বেশি গতির এসব অস্ত্র অত্যন্ত সুরক্ষিত লক্ষ্যবস্তু ধ্বংসে কার্যকর। এগুলোর গতি ও গতিপথ হঠাৎ পরিবর্তন করা যায়, ফলে প্রতিরক্ষাব্যবস্থার পক্ষে প্রতিহত করা কঠিন হয়ে পড়ে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিমানবাহী রণতরি বা শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তাদের লক্ষ্য করে এগুলো ব্যবহার করা সম্ভব।
চীন ইতিমধ্যে ওয়াইজে–১৭, ওয়াইজে–১৯ ও ওয়াইজে–২০ ক্ষেপণাস্ত্র প্রদর্শন করেছে। বিভিন্ন তথ্য অনুযায়ী, দেশটি ২০২০ সাল থেকে সেনাবাহিনীতে হাইপারসনিক গ্লাইড যান সরবরাহ করছে। ২০১৮ সালে মার্কিন প্রতিরক্ষা কর্মকর্তারা জানিয়েছিলেন, চীন গত দশকে যুক্তরাষ্ট্রের তুলনায় ২০ গুণ বেশি হাইপারসনিক পরীক্ষা চালিয়েছে।
রাশিয়া কিনঝাল, জিরকন ও অ্যাভানগার্ড নামের তিন ধরনের হাইপারসনিক অস্ত্রের দাবি করছে। যদিও ইউক্রেন এসব অস্ত্র ভূপাতিত করার কথা বলেছে, তবুও মস্কো অন্তত কিছু অস্ত্র মোতায়েন করতে সক্ষম হয়েছে।
অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রের হাইপারসনিক কর্মসূচি বারবার বিলম্বিত হচ্ছে। সেনাবাহিনী চলতি বছর শেষে ‘ডার্ক ইগল’ মোতায়েনের পরিকল্পনা করছে। তবে বিমানবাহিনীর এআরআরডব্লিউ ও এইচএসিএম কর্মসূচিতে নকশাগত জটিলতা দেখা দিয়েছে। উৎপাদন শুরু হতে পারে ২০২৬–২০২৭ সালের দিকে।
ওয়াশিংটনভিত্তিক বিশেষজ্ঞ টম কারাকো বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ধীরগতিতে এগোলেও পরিস্থিতি ততটা হতাশাজনক নয়। যুক্তরাষ্ট্রের কাছে স্টেলথ বিমানের মতো বিকল্প সামর্থ্য আছে, যা চীনের তুলনায় এগিয়ে রাখে।
তবে সামরিক বিশ্লেষকদের মতে, হাইপারসনিক অস্ত্রে চীনের অগ্রগতি ও যুক্তরাষ্ট্রের বিলম্ব একটি বৈশ্বিক সামরিক ভারসাম্যহীনতার ইঙ্গিত দিচ্ছে।

Leave a comment