কাতারের রাজধানী দোহায় ইসলামি সহযোগিতা সংস্থার (ওআইসি) উদ্যোগে অনুষ্ঠিত জরুরি শীর্ষ সম্মেলনে মুসলিম দেশগুলো ইসরায়েলের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছে । সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) অনুষ্ঠিত এ সম্মেলনে প্রায় ৬০টি দেশের নেতা ও প্রতিনিধি অংশ নেন।
যৌথ ঘোষণায় ইসরায়েলের সাম্প্রতিক বিমান হামলাকে “কাপুরুষোচিত ও বেআইনি” আখ্যায়িত করা হয়। বলা হয়, এই পদক্ষেপ আঞ্চলিক শান্তি প্রক্রিয়ার জন্য বড় ধরনের বাধা এবং আন্তর্জাতিক শান্তি প্রচেষ্টাকে মারাত্মকভাবে দুর্বল করছে।
সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী দেশগুলো ইসরায়েলের বিরুদ্ধে একযোগে কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানিয়েছে। এছাড়া আন্তর্জাতিক আদালতে বিষয়টি উত্থাপন এবং আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার প্রস্তাবও করা হয়েছে।
কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাজেদ আল-আনসারি বলেন, “এই সম্মেলন আরব ও ইসলামি বিশ্বের ঐক্য ও সংহতির প্রতিফলন। ইসরায়েলের কর্মকাণ্ড রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসবাদ ছাড়া আর কিছু নয়।”
এর আগে রোববার (১৪ সেপ্টেম্বর) দোহায় আরব ও ইসলামি পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠকে কাতারের নিরাপত্তাকে পুরো আরব ও ইসলামি বিশ্বের নিরাপত্তার অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে বর্ণনা করা হয়। বৈঠকে ইসরায়েলের সাম্প্রতিক পদক্ষেপকে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন ও আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য ভয়াবহ হুমকি হিসেবে ধরা হয়।
গত ৯ সেপ্টেম্বর দোহায় যুক্তরাষ্ট্র-সমর্থিত গাজা যুদ্ধবিরতি আলোচনায় অংশ নিতে আসা হামাস নেতাদের লক্ষ্য করে বিমান হামলা চালায় ইসরায়েল। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী দাবি করে, তারা সুনির্দিষ্টভাবে হামাস নেতৃত্বকে টার্গেট করেছে।
অন্যদিকে, হামাসের নেতারা বলেন, “এই হামলা প্রমাণ করে যে নেতানিয়াহুর সরকার শান্তি চায় না। বরং তারা সব ধরনের উদ্যোগ ব্যর্থ করতে চাইছে।”
দোহায় আবাসিক ভবনে চালানো ওই হামলার নিন্দা জানিয়েছে জাতিসংঘসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ। আন্তর্জাতিক মহল বলছে, এই ধরনের হামলা কেবল মানবিক বিপর্যয়কে আরও গভীর করবে এবং শান্তি আলোচনার পথ রুদ্ধ করবে।
ফিলিস্তিনে দীর্ঘদিনের অস্থিরতা নতুন মাত্রা পাচ্ছে কূটনৈতিক টানাপোড়েন ও যুদ্ধবিরতির ব্যর্থতায়। বিশেষজ্ঞদের মতে, ওআইসি’র এই সম্মেলন মুসলিম দেশগুলোর ঐক্য প্রদর্শন করলেও বাস্তবায়নের জন্য কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণই এখন বড় চ্যালেঞ্জ।
Leave a comment