বাংলা চলচ্চিত্রের ইতিহাসে তিনি ছিলেন এক অনন্য নাম—আনোয়ার হোসেন। আজ তাঁর মৃত্যুবার্ষিকী। ২০১৩ সালের এই দিনে ঢাকাই সিনেমার দর্শকপ্রিয় এই অভিনেতা না–ফেরার দেশে চলে যান। দীর্ঘ পাঁচ দশকের অভিনয়জীবনে প্রায় সাড়ে তিন শতাধিক চলচ্চিত্রে কাজ করে খ্যাতি ও জনপ্রিয়তা অর্জন করলেও আজ তিনি প্রায় বিস্মৃতির অতলে হারিয়ে গেছেন।
১৯৩১ সালের ৬ নভেম্বর জামালপুরের মুরুলিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করা আনোয়ার হোসেন শৈশব থেকেই সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে যুক্ত ছিলেন। কলেজে পড়াকালীন নাটকে অভিনয়ের মাধ্যমে শুরু হয় তাঁর শিল্পীজীবন। ১৯৫৯ সালে মঞ্চে অভিনয় দিয়ে যাত্রা শুরু করে দ্রুতই তিনি জায়গা করে নেন রেডিও, থিয়েটার ও চলচ্চিত্রে।
১৯৬৭ সালে ‘নবাব সিরাজউদ্দৌলা’ চলচ্চিত্রে নবাবের চরিত্রে অভিনয় করে পান ব্যাপক খ্যাতি। দেশপ্রেমিক নবাবের যন্ত্রণা দর্শকদের হৃদয়ে গভীরভাবে নাড়া দেয়। এরপর ধারাবাহিকভাবে ‘সূর্যস্নান’, ‘জীবন থেকে নেয়া’, ‘জয় বাংলা’, ‘অরুণোদ্বয়ের অগ্নিসাক্ষী’, ‘লাঠিয়াল’, ‘পালঙ্ক’, ‘গোলাপী এখন ট্রেনে’সহ অসংখ্য চলচ্চিত্রে তাঁর অনবদ্য অভিনয় তাঁকে অমর করে রাখে।
বিভিন্ন ধারার চরিত্রে সমান দক্ষতায় অভিনয় করে তিনি পেয়েছেন একুশে পদক, জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার, আজীবন সম্মাননা ও নিগার পুরস্কারসহ বহু স্বীকৃতি। তবে জীবদ্দশায় চলচ্চিত্রের প্রতি নিবেদিত প্রাণ এ অভিনেতার প্রতি শিল্পীসমাজের অবহেলা তাঁকে কষ্ট দিয়েছে। মৃত্যুর পরও সেই বিস্মৃতি যেন রয়ে গেছে।
ঢাকাই সিনেমার ইতিহাস লিখতে গেলে ‘নবাব’খ্যাত এই কিংবদন্তি অভিনেতার নাম স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। তবুও প্রশ্ন থেকে যায়—আজ কেন তিনি এতটা উপেক্ষিত?
Leave a comment