Home বিনোদন আফ্রিদির ‘ভয়ংকর’ চরিত্রের উন্মোচন: ঘনিষ্ঠ বন্ধু তানভীর রাহীর বিস্ফোরক বর্ণনা
বিনোদনরাজনীতি

আফ্রিদির ‘ভয়ংকর’ চরিত্রের উন্মোচন: ঘনিষ্ঠ বন্ধু তানভীর রাহীর বিস্ফোরক বর্ণনা

Share
Share

বাংলাদেশের অন্যতম আলোচিত কনটেন্ট ক্রিয়েটর তৌহিদ আফ্রিদির গ্রেপ্তারকে ঘিরে একের পর এক বিস্ফোরক তথ্য প্রকাশ্যে আসছে। এবার তার ঘনিষ্ঠ বন্ধু ও সহকর্মী তানভীর রাহী এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে আফ্রিদির ব্যক্তিত্ব, অতীত কর্মকাণ্ড এবং ইউটিউব ইন্ডাস্ট্রিতে তার প্রভাব নিয়ে বিস্তারিত বর্ণনা দিয়েছেন।
রাহীর মতে, ক্যামেরার সামনে আফ্রিদি ছিলেন একরকম মানুষ, কিন্তু ব্যক্তিজীবনে তিনি ছিলেন সম্পূর্ণ ভিন্ন, “ভয়ংকর”।

“ক্যামেরার বাইরে সে বাঘের মতো ভয় ধরাত”-
সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া এক ভিডিওতে তানভীর রাহী জানান, “ক্যামেরার সামনে আফ্রিদি শান্ত, বিনোদনমূলক ও আত্মবিশ্বাসী মনে হলেও ক্যামেরার বাইরে তিনি ছিলেন ভয়ংকর। ইউটিউব ইন্ডাস্ট্রিতে তাকে সবাই বাঘের মতো ভয় পেত।”

রাহী অভিযোগ করে বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় অনেকেই আফ্রিদির আচরণের বিরোধিতা করেছিলেন। এমনকি রাহী নিজেও আফ্রিদির রাগের শিকার হন। “রাগ উঠলে সে বেল্ট খুলে আমাদের কুত্তার মতো পেটাতো,” বলে মন্তব্য করেন তিনি।

ক্ষমতার প্রদর্শন ও প্রভাব বিস্তার-
রাহী আরও জানান, আন্দোলনের সময় আফ্রিদি তার প্রভাব খাটাতে চেষ্টা করতেন। এক অভিজ্ঞতার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, “আন্দোলনের কয়েক মাস পর এক রাতে আফ্রিদি আমাকে ভিডিও কল দেয়। হঠাৎ ভয় পেয়ে যাই। ফোন ধরার পর সে বলে, ‘তোর সঙ্গে একজনের কথা বলাবো।’ এরপর ভিপি নূরের সঙ্গে কথা বলিয়ে দেয়। পরে বলে, ‘বুঝছিস আমার অবস্থানটা? সাবধানে থাকিস।’”

রাহীর দাবি, এসব ঘটনায় স্পষ্ট হয়ে যায় যে আফ্রিদি শুধু কনটেন্ট ক্রিয়েটরই ছিলেন না; তিনি রাজনৈতিক মহলেও যোগসূত্র তৈরি করেছিলেন এবং তা দিয়ে অন্যদের ভয় দেখাতেন।

“প্রতিশোধই ছিল তার একমাত্র চিন্তা”-
বন্ধুত্বের দীর্ঘ সময়ের অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে রাহী বলেন, “আফ্রিদির মধ্যে মনুষ্যত্বের ঘাটতি ছিল। সে সবসময় প্রতিশোধের চিন্তায় থাকত—কারে কারে ধরবে, কারে কারে মারবে—এই হিসেবই সে করত। আল্লাহ কখনো এমন মানুষকে ছাড় দেন না।”
গ্রেপ্তার ও রিমান্ড-
উল্লেখ্য, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে যাত্রাবাড়ী থানায় দায়ের হওয়া হত্যা মামলার ১১ নম্বর আসামি তৌহিদ আফ্রিদি। গত রোববার (২৪ আগস্ট) রাতে বরিশালের বাংলাবাজার এলাকায় সিআইডির বিশেষ অভিযানে তিনি গ্রেপ্তার হন। পরদিন আদালত তাকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে পাঠান।

মামলায় প্রধান আসামি সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এছাড়া সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এবং পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক আব্দুল্লাহ আল মামুনও অভিযুক্ত আছেন। আফ্রিদির বাবা, মাইটিভির চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন সাথী, এ মামলার ২২ নম্বর আসামি হিসেবে গত ১৭ আগস্ট ঢাকায় গ্রেপ্তার হন।

আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে আফ্রিদি-
তৌহিদ আফ্রিদি বাংলাদেশের ডিজিটাল কনটেন্ট নির্মাণের অন্যতম পরিচিত মুখ হলেও সাম্প্রতিক ঘটনাপ্রবাহে তার চিত্র সম্পূর্ণ ভিন্ন রূপে প্রকাশ পাচ্ছে। ঘনিষ্ঠ সহকর্মীর বিস্ফোরক মন্তব্যে তার ব্যক্তিত্ব ও প্রভাবের অজানা দিকগুলো নতুনভাবে আলোচনায় এসেছে।

বিনোদন জগতের পরিচিত মুখ থেকে রাজনৈতিকভাবে বিতর্কিত আসামি হয়ে ওঠা আফ্রিদির গল্প এখন পুরো দেশের আগ্রহের কেন্দ্রে। আগামী দিনগুলোতে তার দেওয়া জবানবন্দি এই মামলার গতিপথে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলেই মনে করছেন আইনজীবীরা।

Share

Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Don't Miss

থাইল্যান্ড–কম্বোডিয়া সীমান্তে নতুন করে গোলাগুলি, দু’দিনে নিহত ৭

দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার প্রতিবেশী দুই দেশ থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার সীমান্তে চার মাস পর আবারও উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। গত রোববার থেকে শুরু হওয়া সংঘাতে অন্তত...

ইতিহাসের এই দিনে ঘটে যাওয়া উল্লেখযোগ্য ঘটনা

আজ মঙ্গলবার ০৯ ডিসেম্বর, ২০২৫ ইং। ২৪ অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বাংলা। ১৭ জমাদিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি। বছর শেষ হতে আরো ২২ দিন বাকি রয়েছে।...

Related Articles

এবারের নির্বাচনে হবে সবচেয়ে কঠিন লড়াই”: মির্জা ফখরুল

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে ‘সবচেয়ে কঠিন লড়াই’ হিসেবে...

গণঅধিকার পরিষদে ফিরছেন আসিফ মাহমুদ

অন্তর্বর্তী সরকারের সদ্য পদত্যাগী স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় উপদেষ্টা আসিফ...

বিদেশি আইনজীবী নিয়োগে ট্রাইব্যুনালের অনুমতি চাইলেন সালমান ও আনিসুল

মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় নিজেদের আইনি প্রতিরক্ষাকে আরও শক্তিশালী করতে আন্তর্জাতিক আইনজীবী নিয়োগের...

খালেদা জিয়ার জন্য উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন শেখ হাসিনা : আইএএনএস-এর প্রতিবেদন

ভারতীয় বার্তা সংস্থা আইএএনএস-এর এক বিশেষ প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী...