রাজধানীর গুলশানের ইমানুয়েল পার্টি সেন্টারে আজ শনিবার অনুষ্ঠিত জাতীয় পার্টির দশম জাতীয় কাউন্সিলে কাদেরবিরোধী অংশের দুই শীর্ষ নেতা আনিসুল ইসলাম মাহমুদ ও মুজিবুল হক চুন্নু দেশবাসীর কাছে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন। জুলাইয়ের গণ–অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের অধীন নির্বাচনে অংশগ্রহণকে কেন্দ্র করে সম্ভাব্য রাজনৈতিক ভুলের জন্য তাঁরা এই ক্ষমা চান।
আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেন, সে সময়কার প্রচলিত আইন ও নিয়ম অনুযায়ী নির্বাচনে অংশ নিলেও জনগণ যদি তা অন্যায় মনে করে, তাঁরা বিনা দ্বিধায় ক্ষমা চাইছেন। তাঁর বক্তব্যে বর্তমান সরকারের অর্থনৈতিক ব্যর্থতার সমালোচনা উঠে আসে—বিশেষ করে প্রবৃদ্ধি ৭ শতাংশ থেকে ৩ শতাংশে নেমে আসা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তিনি। একই সঙ্গে তিনি ২০১৪ সালের নির্বাচনের প্রেক্ষাপট তুলে ধরে বিএনপির সঙ্গে সম্ভাব্য ঐক্যচেষ্টা ব্যর্থ হওয়ার ঘটনাও স্মরণ করেন।
কাউন্সিলে নতুন কমিটি ঘোষণা করা হয়। আনিসুল ইসলামকে চেয়ারম্যান, এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদারকে মহাসচিব, কাজী ফিরোজ রশিদকে সিনিয়র কো–চেয়ারম্যান এবং মুজিবুল হক চুন্নুকে নির্বাহী চেয়ারম্যান করা হয়েছে। আগামী ১৫ দিনের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করার পরিকল্পনার কথা জানানো হয়।
জি এম কাদেরপন্থীরা এই কাউন্সিলে যোগ দেননি। তাঁরা এটিকে বেআইনি ও গঠনতন্ত্রবিরোধী আখ্যা দিয়েছেন। তবে কাউন্সিলে কয়েক হাজার নেতা–কর্মীর উপস্থিতি কাদেরবিরোধী শিবিরের শক্তি প্রদর্শনের ইঙ্গিত দেয়। সভায় ২০(ক) ধারা বাতিলের সিদ্ধান্তও গৃহীত হয়, যা জাতীয় পার্টিকে ‘স্বৈরাচার’ আখ্যা দেওয়ার অন্যতম কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
আনোয়ার হোসেন মঞ্জু, রুহুল আমিন হাওলাদারসহ অন্যান্য নেতারা বক্তব্যে সরকারের অকার্যকারিতা, বিদেশে বসবাসরত উপদেষ্টাদের প্রভাব এবং রাজনৈতিক দ্বন্দ্বের অনিবার্যতা নিয়ে মন্তব্য করেন। মুজিবুল হক চুন্নুও অতীতের নির্বাচনী অংশগ্রহণের জন্য নৈতিক ভুলের দায় স্বীকার করে দেশবাসীর কাছে ক্ষমা চান।
গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার ও জনগণের ভাগ্য পরিবর্তনের অঙ্গীকার নিয়ে এই কাউন্সিল শেষ হয়, যা জাতীয় পার্টির অভ্যন্তরীণ ক্ষমতার ভারসাম্যে নতুন অধ্যায়ের সূচনা করেছে।
Leave a comment